নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (সিপিএন–ইউএমএল) চেয়ারম্যান কে পি শর্মা অলি বলেছেন, দেশকে বর্তমান সরকারের হাতে ছেড়ে পালাবেন না। চলতি মাসের শুরুর দিকে জেন-জিদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পর দেশটির ভক্তপুরের গুন্ডুতে দলীয় এক সমাবেশে তিনি এই ঘোষণা দেন।
সমাবেশে অলি উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা কি ভাবছেন দেশকে আমরা এই ভিত্তিহীন সরকারের হাতে ছেড়ে দিয়ে পালাব? কোনো দিন না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরাই এ দেশ গড়ে তুলব। আমরা দেশকে আবার সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়ে আনব, শান্তি ও সুশাসন ফিরিয়ে আনব।’’
অলির এই বক্তৃতা ছিল তার সরকারি বাসভবন ত্যাগ করার ১৮ দিন পরের প্রথম প্রকাশ্য ভাষণ। নিরাপত্তার জন্য এক পর্যায়ে তিনি ৯ দিন নেপালের সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা সুরক্ষায় ছিলেন এবং পরে ১৮ সেপ্টেম্বর গুন্ডুতে ভাড়াবাসায় গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ৯ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীরা ভক্তপুরের বালকোটে তাঁর ব্যক্তিগত বাসভবন পুড়িয়ে দিয়েছিল।
কর্তৃত্বচ্যুত অলি নেপালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির নেতৃত্বাধীন সরকারকে জনসমর্থনহীন সরকার আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার জনগণের ভোটে গঠিত নয়; বরং লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে।’’
অলি দাবি করেন, তিনি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন না এবং আন্দোলনের সময় তিনি প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তার রেকর্ডিং প্রকাশ করতে তৎকালীন সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন। এছাড়া তিনি বলেন, তাঁর নতুন বাসভবনের অবস্থান জানার পরও বর্তমান সরকার তাঁকে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ‘‘সামাজিক মাধ্যমে বলা হচ্ছে ‘অলির নতুন বাড়ি খুঁজে বের করে আক্রমণ করো।’ সরকার কী করছে? শুধু বসে বসে দেখছে,’’ অভিযোগ করেন তিনি।
সমাবেশে অলি দলের নেতাকর্মীদের ঐক্য ও সংগঠনের আহ্বান জানান এবং পুনরায় রাজনৈতিক আন্দোলন ও সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানোর কলে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহিত করেন। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন ও রাজনৈতিক প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার সংকল্প ব্যক্ত করেন।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক আন্দোলনের ধরণ, সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং অলির নেতৃত্বে সিপিএন–ইউএমএলের কর্মসূচি কেমন রূপ নেবে—এগুলোই এখন অনেকে খেয়াল করছেন এবং দেশটির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই এই বিষয়গুলোই প্রাধান্য পাচ্ছে।