মস্কোর শীর্ষ কূটনীতিক সের্গেই ল্যাভরভ অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেইনকে ব্যবহার করে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘সত্যিকারের যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে।
বৃহস্পতিবার জি২০ জোটের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের এক বৈঠকে তিনি এই অভিযোগ করেছেন, বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যুক্তরাজ্য তার অভিযোগ খারিজ করে ‘মিথ্যা কল্পনাজগতের বিকৃত তথ্য’ আখ্যা দিয়েছে।
ল্যাভরভের এই মন্তব্য আসে জাতিসংঘে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণের দুই দিন পর। ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে ইউক্রেইনের যুদ্ধ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং বলেন, ন্যাটোর উচিত ইউরোপীয় আকাশসীমায় প্রবেশ করা রুশ যুদ্ধবিমান গুলি ভূপাতিত করা।
নেটোর বিমান পোল্যান্ডের আকাশসীমায় ঢুকে পড়া রুশ ড্রোন গুলি ভূপাতিত করার এক সপ্তাহ পর এস্তোনিয়া জানিয়েছে, মস্কো তাদের আকাশসীমায় তিনটি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। এ নিয়ে ইউরোপের পূর্ব পাশজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে।
ল্যাভরভ বলেন, “আরেকটি স্পষ্ট উদাহরণ হল ইউক্রেইনে পশ্চিমাদের প্ররোচিত সঙ্কট, যেখানে ন্যাটো ও ইইউ মিলে ইতিমধ্যে আমার দেশের বিরুদ্ধে সত্যিকারের যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং তারা সরাসরি জড়িত।”
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ল্যাভরভ আগেও এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। তবে জাতিসংঘ ভবনের চার দেয়ালের ভেতর, জি২০ পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সামনে তার এই বক্তব্য নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।
ল্যাভরভ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক মন্তব্যের উল্লেখ না করে রাশিয়ার দীর্ঘদিনের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, পশ্চিমাদের কর্মকাণ্ডই ইউক্রেইনে যুদ্ধ উসকে দিয়েছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ইউক্রেইনে ‘বিনা উসকানিতে আগ্রাসী যুদ্ধ’ চালানোয় রাশিয়াকে নিন্দা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “যুদ্ধের কারণ নিয়ে রুশ প্রতিনিধি যতই মিথ্যা তথ্য বা অপপ্রচার করুন না কেন, তা কারো মন জয় করতে পারবে না।”
বর্তমানে রাশিয়ার হাতে যুদ্ধ পূর্ববর্তী ইউক্রেইনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড রয়েছে। ইউরোপের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কালাস ক্রেমলিনের ওপর তুমুল আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অভিযোগ ও উত্তাপের মাঝেই বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্পও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, ইউক্রেইনে রাশিয়ার অবস্থান ‘খুবই খারাপ’।
বুধবার ল্যাভরভ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শনিবার তার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।