বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরোলেও দেশের রাজনীতি এখনো জাতীয় সংসদকেন্দ্রিক হতে পারেনি।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর গ্রিন রোডে পানি ভবনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সম্মেলনে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে যে গার্বেজ তৈরি করেছে, যে জঞ্জাল সৃষ্টি করেছে, সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে; সেগুলোকে এক বছরের মধ্যে ঠিক করা সম্ভব নয়।
রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীলভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত পার্লামেন্টকে শক্তিশালী করতে হবে। সব কর্মকাণ্ড সংসদকেন্দ্রিক না হলে পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র কার্যকর হবে না।”
তিনি বলেন, “রাস্তা থেকে উঠে সংসদে আসতে হবে। আর কতদিন রাস্তায় থাকব? ৫০ বছর তো আমরা রাস্তায়ই আছি। এখন সময় এসেছে গণতন্ত্রকে সংস্কৃতিতে পরিণত করার।”
নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান
সব দলকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাব—আমাদের মধ্যে যে ভিন্নতা বা দূরত্ব আছে, তা দূর করে যেন আমরা আগামী নির্বাচনকে সত্যিকারের অর্থবহ করতে পারি।
অর্থাৎ, একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত পার্লামেন্ট হবে প্রাণবন্ত, অর্থবহ এবং রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে শ্রমিক শ্রেণিসহ সব শ্রেণির মানুষের দাবি-দাওয়া পূরণ হবে, স্বীকৃতি পাবে।”
পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত এ সম্মেলনে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুকে পুনরায় সভাপতি এবং হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ার হোসাইন।
‘জুলাই সনদ গণতন্ত্রের জন্য অনন্য’
জুলাই সনদ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “গতকাল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। আমরা বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল মিলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছি। এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য ঘটনা।
রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তন, মূলনীতির সংশোধন, রাজনীতিকে স্বচ্ছ করা, জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করার উদ্যোগ এটি।”
তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে গতকাল সংসদ ভবনের সামনে কিছু তরুণ বসে যাওয়ার পর একটি সহিংস ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা গণতন্ত্রের পক্ষে সহায়ক নয়।”
ফখরুল বলেন, “এখন অন্তর্বর্তী সরকার যতটা সম্ভব ভালো কাজ করার চেষ্টা করছে। আমরা যতই সমালোচনা করি না কেন, এক বছরের মধ্যে ১৫ বছরের জঞ্জাল দূর করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়কারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিমসহ সংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
পূর্বের পোস্ট :