বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য, একমাত্র কথা—আমরা গণতন্ত্র ফেরত চাই। নির্বাচিত পার্লামেন্ট চাই। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেটা চাই।’

আজ বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের আয়োজনে কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন। অনুষ্ঠানের শুরুতে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, হান্নান শাহ ছিলেন একজন অকৃত্রিম রাজনৈতিক নেতা ও জনগণের প্রতিনিধি। কঠিন সময়েও তিনি সাহসিকতার সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছি প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে। আইনশৃঙ্খলা একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। সেটাকে ঠিক করে আনার চেষ্টা করছেন তিনি। খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই এই সরকারকে, আপনি শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবেন। উপদেষ্টামণ্ডলীর মধ্যে কেউ কেউ কোনো দলের জন্য পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে অভিযোগ আসছে। বাংলাদেশের মানুষ এটা শুনতে চায় না। তারা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা চায়, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়।’

সংস্কার নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছা অনুযায়ী সরকার কিছু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সংস্কার কমিশন কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। তারেক রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে যেসব সংস্কারের কথা এসেছে, তার সবকটিই আমাদের ৩১ দফার সঙ্গে মিলে যায়। আমরা সব কটিতে একমত হয়েছি।’

বিএনপি নেতা–কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আর কারও জন্য অপেক্ষা নয়। এখন নির্বাচনের রাস্তায় উঠে গেছে গাড়ি। এই গাড়ি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত যেতে হবে। ধানের শীষে নির্বাচন করতে নেমে পড়ুন। যারা বাংলাদেশকে বারবার ভুল পথে পরিচালিত করেছে, তাদের পরাজিত করুন। কোনো দিন যেন তারা ক্ষমতায় আসতে না পারে, তার জন্য ব্যবস্থা নিন।’

স্মরণসভায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ওমর ফারুক, বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছাইয়েদুল আলম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক এস এম রফিকুল ইসলাম, প্রয়াত হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নানসহ অনেকে বক্তব্য দেন।

স্মরণসভায় জেলা ও উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।

উল্লেখ্য, আ স ম হান্নান শাহ ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ছিলেন।