প্রোপোশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতির পক্ষে থাকা দলগুলোর সঙ্গে সব বিষয়ে ঐকমত্য সম্ভব নয়; তাই বিষয়টি জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কসমস সেন্টারে আয়োজিত ‘ইলেকশন ২০২৬: অ্যা ক্রিটিক্যাল লুক অ্যাট প্রোপোশনাল রিপ্রেজেন্টেশন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, “দেশ প্রায় ১৪ মাস ধরে নির্বাচনহীন একটি সরকারের হাতে আছে। বর্তমান সংবিধানের আওতায় নির্বাচন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে এবং জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে—তারা পিআর চায় নাকি প্রচলিত ব্যবস্থায় নির্বাচন চায়।”
পিআর পদ্ধতির পক্ষে থাকা দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, “যারা পিআর চান, তাদের উচিত জনগণের ম্যান্ডেট আনা। ৩০টি রাজনৈতিক দল নিয়ে আলোচনা করে আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার জনগণ কাউকে দেয়নি। জনগণ কী চায়, সেটি নির্বাচনের মাধ্যমেই নির্ধারণ করবে।”
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে, তা নিয়েই একটি কার্যকর নির্বাচনের ওপর জোর দিয়ে খসরু বলেন, “আমরা তো আর বাকশাল কায়েম করছি না যে সব রাজনৈতিক দল সব বিষয়ে একমত হবে। মতাদর্শের জায়গায় মতভেদ থাকবেই। এই মতভেদ বজায় রেখেই প্রতিটি দল নিজেদের মতো করে জনগণের কাছে যাবে।”
পিআর নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের গণভোটের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জনগণ পিআর চায়—এমন কোনো জনসমর্থন তারা দেখাতে পারবে না। কমিশনের আলোচনায়ও এ নিয়ে স্পষ্ট কিছু নেই। তাহলে এই গণভোটের দাবি কেন?”
কিছু দলের দাবিতে বলা হচ্ছে, পিআর পদ্ধতি চালু হলে নির্বাচনে পেশিশক্তির প্রভাব কমবে। এ বিষয়ে খসরু বলেন, “পেশিশক্তির দৌরাত্ম্য কমানোর কথা বলে পিআর এনে একজন জনপ্রিয় প্রতিনিধিকে কেন বঞ্চিত করা হবে—এ যুক্তির ব্যাখ্যা তারা দিতে পারবেন না। পেশিশক্তি রোধ করার জন্য রাষ্ট্র আছে, আদালত আছে, পুলিশ আছে। তাই নির্বাচন পদ্ধতি পাল্টানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
গণতন্ত্রে একক দলের শাসনের সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলাতে হবে। ভিন্নমত ও বিরোধীদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। সাংঘর্ষিক রাজনীতির সংস্কৃতি থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
আমীর খসরু আরও বলেন, “সংসদ গঠিত হলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সংসদীয় কমিটিকে কার্যকর করে পার্লামেন্টারি হিয়ারিং শক্তিশালী করলে জনপ্রতিনিধিরাই জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।”
পূর্বের পোস্ট :