বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে।

গতকাল শুক্রবার নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানান তিনি।

তোবগে বলেন, ‘এ উদ্যোগ বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে নতুন মাত্রা দেবে।’ এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ ও ভুটান।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জানান, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘গেলেপু মাইন্ডফুলনেস সিটি (জিএমসি)’কে কুড়িগ্রামে ভুটানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে উভয় দেশ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুই দেশকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সব সুযোগ অনুসন্ধান করতে হবে।

বৈঠকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় পর্যটন প্রসারের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশি বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ভুটানে যেতে পারেন, যা পর্যটন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তোবগে আরও জানান, ভুটান তাদের জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনাকে বাংলাদেশের জন্য কাজে লাগাতে চায়। একই সঙ্গে, ভুটানের ওষুধশিল্পে বাংলাদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে আগ্রহী তাঁর সরকার। এছাড়া তিনি ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন।

দুই নেতার আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকটও স্থান পায়। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভুটান অংশ নেবে।

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে তোবগে বলেন, বাংলাদেশ এখন ‘সঠিক নেতৃত্বে রয়েছে।’ তিনি তাঁকে ‘মাই প্রফেসর’ বলে সম্বোধন করেন।

তোবগে সম্প্রতি থিম্পুতে উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি ভবনের নকশারও প্রশংসা করেন, যা ‘হিমালয়ের পাদদেশে বঙ্গোপসাগর’ থিমে নির্মিত হয়েছে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তোবগে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বলেন, তিনি সম্ভবত আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হওয়ার আগে এ সফর করবেন।