সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোয় তিন ধরনের কর্মকর্তা আছেন—আগের সরকারের ঘনিষ্ঠজন, দীর্ঘদিন পদবঞ্চিত এবং নিরপেক্ষরা; এই ত্রিমাত্রিক টানাপোড়েনের দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)–এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যও ইফতেখারুজ্জামান; বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচন না চাইলে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য শুধু রাজনৈতিক দল নয়, পাশাপাশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমেরও নিরপেক্ষ ভূমিকা জরুরি।’

শুক্রবার ধানমন্ডি টিআইবির কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনবিষয়ক সাংবাদিক সংগঠন আরএফইডি ও টিআইবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইলেকশন ট্রেনিং কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোর দুর্বলতা তুলে ধরেন।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ অনেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা এখনো স্বপদে বহাল আছেন। এই দুর্বলতা মেনেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের দিকে এগোতে হচ্ছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, প্রশাসনের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোতেও পক্ষপাতমূলক অবস্থান দৃশ্যমান। এই ধরনের কাঠামো শুধু গত ১৬ বছরেই নয়, দীর্ঘ ৫৪ বছরে গড়ে উঠেছে।

‘যাদের দীর্ঘদিন বঞ্চিত করা হয়েছে, তাদের অবস্থান ফিরে পাওয়ার প্রক্রিয়াতেও দলীয়করণ প্রতিস্থাপিত হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের মাধ্যমে দ্বিগুণ প্রভাবের মধ্যে আনা হয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে পেশাগত বিরোধ। হাতেগোনা কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছেন,’ বলেন তিনি।

টিআইবি নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, তিন ধরনের শক্তির টানাপোড়েনের মধ্য দিয়েই প্রশাসন এগোচ্ছে এবং নিজেদের ভূমিকা পালন করছে। রাতারাতি এই কাঠামো পরিবর্তন করা কিংবা পুরো প্রশাসন নতুন করে সাজানো সম্ভব নয়।

তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, একটি স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নতুন পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে সময় নিয়ে পরিবর্তন আনা সম্ভব।