গাজার জেতুন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংক হামলায় এক ফিলিস্তিনি পরিবারের ১১ সদস্য নিহত হয়েছেন। আট দিন আগে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এটাই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সহিংসতা।

গাজার সিভিল ডিফেন্সের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ইসরায়েলি বাহিনীর ছোড়া ট্যাংকের একটি গোলা আবু শাবান পরিবারের সদস্যদের বহনকারী বেসামরিক গাড়িতে আঘাত হানে। এতে শিশু ও নারীসহ ১১ জন নিহত হন।

গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এক বিবৃতিতে জানান, নিহতদের মধ্যে সাতজন শিশু, তিনজন নারী এবং একজন পুরুষ।

তিনি বলেন, ‘পরিবারটিকে সতর্ক করা যেত বা ভিন্নভাবে মোকাবিলা করা যেত। যা ঘটেছে, তা নিশ্চিত করেছে যে দখলদাররা এখনও অসহায় নিরীহ মানুষদের রক্তের জন্য তৃষ্ণার্ত।’

হামাস এই ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের ইসরায়েলের ওপর চাপ দিতে আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, হামলার সময় পরিবারটি এমন এলাকায় ছিল, যেটি শান্তি চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি সেনাদের ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।

যুদ্ধবিরতির মধ্যে যারা তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’ অতিক্রম করেছে, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী ‘ইয়েলো লাইন’ হচ্ছে সেই সীমানা, যার পেছনে ইসরায়েলি সেনাদের সরে যাওয়ার কথা।

গাজায় অবস্থানরত আল জাজিরার প্রতিনিধি জানান, অধিকাংশ ফিলিস্তিনির ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় তারা জানতেই পারছেন না ইসরায়েলি সেনারা কোথায় অবস্থান করছে। ফলে তারা অজান্তেই ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, গাজায় ‘ইয়েলো লাইন’গুলো শিগগিরই স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করে দেওয়া হবে, যাতে বিভ্রান্তি না থাকে।

যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও গাজার প্রায় ৫৩ শতাংশ এলাকা এখনো ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

শনিবার গাজার গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, বন্দি বিনিময় অব্যাহত থাকলেও যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

হামাস জানিয়েছে, তারা শান্তি চুক্তি মেনে চলছে এবং ইসরায়েলি বন্দিদের মৃতদেহ উদ্ধারে কাজ করছে। শুক্রবার আরও এক জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়ার পর নিহত বন্দিদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে।