ইউক্রেইনকে দূর-পাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য হোয়াইট হাউজকে সবুজ সংকেত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগন। এই ক্ষেপণাস্ত্র দিলে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব অস্ত্রভাণ্ডারে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না—এমন মূল্যায়নের পরই ছাড়পত্র দিয়েছে তারা।

তবে টমাহক সরবরাহের বিষয়ে চূড়ান্ত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ওপরই ছেড়ে দিয়েছে পেন্টাগন। বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন তিনজন মার্কিন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তা সিএনএনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পেন্টাগনের জয়েন্ট স্টাফ সম্প্রতি হোয়াইট হাউজে তাদের মূল্যায়ন জমা দেয়। এর কিছু পরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে জেলেনস্কি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের অনুরোধ জানান, যাতে রাশিয়ার অভ্যন্তরে থাকা জ্বালানি ও তেল অবকাঠামোতে কার্যকরভাবে আঘাত হানা যায়।

প্রায় এক হাজার মাইল পাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র এ ধরনের অভিযানে কার্যকর হতে পারে বলে মনে করছে পেন্টাগন। তাদের ইতিবাচক মূল্যায়নের পর আশাবাদী হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্ররাও। তারা মনে করছেন, এখন ইউক্রেইনকে টমাহক না দেওয়ার মতো কোনো অজুহাত যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

তবে ট্রাম্পের অবস্থান এখনও দ্বিধান্বিত। এ মাসের শুরুর দিকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা এমন কিছু দিতে চাই না যা আমাদের নিজের দেশ রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন।’ বৈঠকের দিন তিনি তার অবস্থান আরও স্পষ্ট করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদেরই এই ক্ষেপণাস্ত্র ‘প্রয়োজন’। পরে জেলেনস্কিকে জানিয়ে দেন, আপাতত ইউক্রেইনকে টমাহক দেওয়া হবে না।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন একদিন পর, যখন তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। ওই সময় পুতিন ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেন, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো শহরে আঘাত হানতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্ককে আরও জটিল করবে।

তবে ট্রাম্প যে একেবারে টমাহক দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন, তা নয়। সূত্রগুলো জানায়, প্রশাসন এমন একটি পরিকল্পনা করছে যাতে প্রেসিডেন্ট নির্দেশ দিলেই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ শুরু করা যায়।

এদিকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে নিয়ে অধৈর্য ও হতাশ হয়ে পড়েছেন। তিনি পুতিনের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন এবং হাঙ্গেরিতে নির্ধারিত বৈঠক স্থগিত করেছেন।

পেন্টাগনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেইনকে টমাহক দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভাণ্ডার শূন্য হওয়ার আশঙ্কা এখন আর নেই। তবে ইউক্রেইনের সেনাদের এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়েই মূলত তাদের ভাবনা।