আরাকান আর্মি (এএ) অভিযোগ করেছে, তাদের ঘাঁটিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পেছনে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের হাত রয়েছে। থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) ও আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন) মিলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতেও রাখাইনের মংডু টাউনশিপে এএ–এর একটি ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
আরাকান আর্মির প্রধান তুন মাইয়াত নায়িং অভিযোগ করেন, মিয়ানমার সরকারের কাছ থেকে দখলে নেওয়া এলাকায় শৃঙ্খলা ফেরাতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কিছু কর্মকর্তা সীমান্তের ওপারের রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছেন এবং হামলা চালাতে নির্দেশ দিচ্ছেন।
তিনি আরও দাবি করেন, আগে এসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ হত মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে, এখন তা সরাসরি হচ্ছে। তাদের কাছে এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যও আছে বলে জানান তিনি।
ইরাবতীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুন মাইয়াত নায়িং বলেন, বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বিদ্রোহীদের তাউংপিও সীমান্ত এলাকায় বা তার উত্তরে এএ ঘাঁটিতে হামলা চালাতে বলছেন। “যে অস্ত্রই থাকুক, তা দিয়েই তারা আমাদের ওপর হামলা চালাতে বলছেন।”
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, এসব অভিযোগের বিষয়ে তারা মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসের বক্তব্য চেয়েছে। তবে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এ ছাড়া আইএসপিআর বা বিজিবির মন্তব্যও পাওয়া যায়নি।
প্রায় একই ধরনের অভিযোগ গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতেও করে এএ। সেখানে বলা হয়, আরসা ও আরএসও সীমান্ত পেরিয়ে মংডুতে প্রবেশ করছে, অমুসলিম লোকজনকে অপহরণ, হত্যা ও মুক্তিপণ আদায় করছে এবং নানা অপ্রচার চালাচ্ছে।
আরাকান আর্মির প্রধান অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা সীমান্তে বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে তাদের পোশাক পরিয়ে দাবি করছে, তারা এএর সঙ্গে লড়াই করেছে।
রাখাইনের প্রায় পুরো অঞ্চলই এখন আরাকান আর্মির দখলে। এর মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁষা বুথিয়াডং ও মংডু টাউনশিপও রয়েছে। বর্তমানে প্রদেশটির ১৭টির মধ্যে ১৪টি প্রশাসনিক এলাকা এএর নিয়ন্ত্রণে।
আরসার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে হিন্দু গ্রামে হামলা ও বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে সহিংসতার অভিযোগ আছে। মিয়ানমার ও মালয়েশিয়া সরকার তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে ১৯৮২ সালে আত্মপ্রকাশ করা আরএসওও বর্তমানে জান্তা সরকারের পক্ষ হয়ে এএর বিরুদ্ধে লড়ছে।
সংগঠনটির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে শিশুদের জোর করে যোদ্ধা হিসেবে ব্যবহার করছে। রাখাইনে সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিচ্ছিন্ন এলাকায় ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছে আরাকান আর্মি।