চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগের সময় গুলির ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত’ বলে মনে করছে পুলিশ। এতে সারোয়ার হোসেন বাবলা নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, যিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ জানিয়েছেন, এই গুলি ‘এরশাদ উল্লাহকে নয়, সারোয়ার বাবলাকে লক্ষ্য করেই’ চালানো হয়েছে। বুধবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক অনুমানে মনে হচ্ছে, এরশাদ সাহেব টার্গেটে ছিলেন না। টার্গেট ছিলেন সারোয়ার বাবলা, তিনি মারা গেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা আছে, কারা এই হামলা ঘটিয়েছে। মামলা হবে, তদন্ত হবে। প্রাথমিকভাবে যেটা বলব, এরশাদ উল্লাহ টার্গেট ছিলেন না। সারোয়ার বাবলা টার্গেট ছিলেন। কারণ, আমরা শুনেছি গুলি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।’

সিএমপি কমিশনার জানান, ‘এটা সরোয়ার বাবলার এলাকা ছিল। বাইরে থেকে এসে হামলা চালানো হয়। এরশাদ উল্লাহ এখানে নামাজ পড়তে এসেছিলেন। সরোয়ারের বিরুদ্ধেও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ছিল।’

বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী পূর্ব মসজিদের কাছে জনসংযোগ চলাকালে গুলি ছোড়া হয়। এতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের অনন্যা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সরোয়ারের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন সিএমপি’র উত্তর বিভাগের উপকমিশনার আমীরুল ইসলাম।

নিহত সরোয়ার নিজেকে বিএনপি কর্মী দাবি করলেও পুলিশ জানিয়েছে, তিনি ছিলেন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। গুলিবিদ্ধ ইরফানুল হক শান্ত (৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক), আমিনুল হক ও মর্তুজা হকও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এক নেতা জানান, এরশাদ উল্লাহ মাগরিবের নামাজ পড়ে জনসংযোগ শুরু করার সময় সরোয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। পাশে থাকা এরশাদ উল্লাহ ও অন্যরা তাতে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি দাবি করেন, এটি বিএনপি বা এর সহযোগী সংগঠনগুলোর ‘ভিতরকার কোনো ঘটনা নয়’।

পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ৩০ মার্চও সারোয়ারকে লক্ষ্য করে চকবাজার এলাকায় গুলি চালানো হয়েছিল, যেখানে দুজন নিহত হন। সেদিনও সারোয়ার কৌশলে পালিয়ে যান।

সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ‘মূল কুশীলবদের অনেকে জেলে আছে, তবে দেশের বাইরে থেকেও ইন্ধন আসছে। বাকলিয়ায় জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার ও রিমোর্ট এলাকায় লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিঃসন্দেহে নির্বাচনের আগে এমন ঘটনা শিক্ষণীয়। আমরা সব দলকে বলব, নির্বাচনি প্রচারণার অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে স্থানীয় থানা ও এসবিকে জানাতে হবে, যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’