দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে এবার ১২ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। এ অনুমতির মেয়াদ রয়েছে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। গত সোমবার পর্যন্ত ভারতে রপ্তানি হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ। এই রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ডলার বা প্রায় ২০ কোটি টাকা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে।

এ বছর ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সোমবার পর্যন্ত ১৬টি প্রতিষ্ঠান ইলিশ রপ্তানি করেছে। অর্থাৎ ২১টি প্রতিষ্ঠান এখনও কোনো ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। রপ্তানি হয়েছে বেনাপোল ও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। এই দুটি স্থলবন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শেষ মুহূর্তে আর ইলিশ রপ্তানি হওয়ার খুব বেশি সুযোগ নেই।

এক দশকে সবচেয়ে কম রপ্তানিএ

নবিআরের তথ্য অনুযায়ী, এক দশকের মধ্যে ২০১৯ সালে ইলিশ রপ্তানি শুরু হয়। ওই বছর ৪ লাখ ৭৬ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়, যা থেকে আয় হয়েছিল ৩৯ লাখ ডলার বা ৩৩ কোটি টাকা। গত সাত বছরে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরে—১৭ লাখ কেজি ইলিশ, রপ্তানি আয় ১ কোটি ৩৪ লাখ ডলার বা ১৩৯ কোটি টাকা। ফলে এবারই ভারতে সবচেয়ে কম ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে।

চট্টগ্রামের কালুরঘাটের প্যাসিফিক সি ফুডস ৪০ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিল। তবে মাত্র দেড় হাজার কেজি রপ্তানি করতে পেরেছে। পরিচালক আবদুল মান্নান বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে দাম কমার আশায় রপ্তানি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দাম বেশি থাকায় আর রপ্তানি করা হয়নি।’

ভারতের বাজারে মিয়ানমারের প্রভাব

বাংলাদেশের চেয়ে মিয়ানমারের ইলিশের রপ্তানিমূল্য কম। ফলে ভারতের বাজারে মিয়ানমারের ইলিশ বেচাকেনা বেশি। ২৪-২৫ অর্থবছরে মিয়ানমার থেকে ৬.৫ লাখ কেজি ইলিশ আমদানি করেছে ভারত, যেখানে বাংলাদেশের ইলিশের আমদানি হয়েছে ৫.৪২ লাখ কেজি।

রপ্তানির ন্যূনতম মূল্য

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার সাড়ে ১২ ডলার বা ১,৫৩২ টাকা কেজি প্রতি ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য নির্ধারণ করেছে। তবে চাইলেই বেশি দামে রপ্তানি করা যাবে। এ বছরের ৪৫টি চালানের মধ্যে ৪৪টি চালানই ন্যূনতম মূল্যে রপ্তানি হয়েছে। মাত্র একটি চালান ভোলার চরফ্যাশনের রাফিদ এন্টারপ্রাইজ বেশি দামে রপ্তানি করেছে—কেজিপ্রতি ১৩.৬০ ডলার।

প্রতিবার অনুমতির তুলনায় কম রপ্তানি

প্রতিবার অনুমতির তুলনায় বাস্তবে রপ্তানি করা হয় খুব কম। গত বছর ২৪ লাখ কেজির অনুমতি থাকলেও পাঁচ লাখ ৪৪ হাজার কেজি রপ্তানি হয়েছিল। এবারও অনুমিত ১২ লাখ কেজির মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানিকারকরা বলছেন, স্থানীয় বাজারের দাম ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে রপ্তানি করতে হয়।