সার কারখানায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ডাকা গণশুনানিতে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) যোগ দেবে না বলে জানিয়েছে।
ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ক্যাব মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিইআরসির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে দেড় মাস আগে অনিয়মের অভিযোগ করে যে চিঠি ক্যাব দিয়েছিল, তার নিষ্পত্তি না হলে তারা গণশুনানিতে যোগ দেবে না।
সার কারখানার জন্য গ্যাস ও জ্বালানির দাম বাড়ানো অযৌক্তিক উল্লেখ করে ক্যাব বলেছে, ন্যায্যতা ও যৌক্তিকতা ছাড়াই বিইআরসি জেট ফুয়েল বিক্রিতে পদ্মা অয়েল কোম্পানির চার্জহার বাড়িয়েছে। একইভাবে নতুন শিল্প ও বিদ্যমান শিল্প কারখানার সম্প্রসারণে গ্যাসের বাড়তি দামকে জ্বালানি সুবিচারের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
বিইআরসি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে এবং আইন মানছে না উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সদস্যদের অপসারণের দাবি জানিয়ে ৩১ জুলাই রাষ্ট্রপতিকে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছিল ক্যাব। ওই অভিযোগের সুরাহা না করেই আগের সদস্যদের নিয়ে ৬ অক্টোবর আরেকটি গণশুনানি ডাকায় সেখানে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সংগঠনটি।
ক্যাব জানিয়েছে, যত দিন পর্যন্ত বিইআরসির চেয়ারম্যান ও আইন লঙ্ঘনকারীদের অপসারণ করা না হবে, তত দিন প্রতিষ্ঠানটির ডাকা কোনো গণশুনানিতে তারা যোগ দেবে না।
গত ১০ আগস্ট সার কারখানায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ অয়েল, গ্যাস অ্যান্ড মিনারেল করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এরপর একই প্রস্তাব আলাদা করে জমা দেয় ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি।
প্রতি ঘনমিটার গ্যাসে গড়ে খরচ হয় ২৮ টাকা ৭৮ পয়সা, যেখানে বিক্রি হচ্ছে ২২ টাকা ৯৩ পয়সায়। অর্থাৎ প্রতি ঘনমিটারে লোকসান হচ্ছে ৫ টাকা ৮৫ পয়সা। এতে চলতি অর্থবছরে ১২ হাজার ২৯১ কোটি টাকা ঘাটতি হতে পারে যেখানে সরকার ভর্তুকি বরাদ্দ রেখেছে ছয় হাজার কোটি টাকা। সার কারখানায় গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে ঘাটতি কিছুটা কমানো সম্ভব হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
সার কারখানায় বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৬ টাকা। দাম বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হলে প্রায় ৪ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা বাড়তি আয় হবে। তাই সার কারখানায় গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ৪০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১১ সেপ্টেম্বর গণশুনানির বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিইআরসি। শুনানিতে বক্তব্য দেওয়ার তালিকায় নাম দিতে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির গণশুনানির বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করল ক্যাব।