সাতের দশক থেকে আজ পর্যন্ত বনি এমের সুর হারায়নি, হারায় না। ২০২৫ সালে ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান চললেও তাদের গান তরুণ প্রজন্মের কাছে নতুন রূপে ফিরে এসেছে। ইউটিউব শর্টস ও টিকটকে ‘ড্যাডি কুল’, ‘সানি’ কিংবা ‘রাসপুতিন’–এর রিমিক্স ভাইরাল হয়ে বনি এমকে পুনরায় আলোচনায় এনেছে।

বনি এমের সূচনা হয়েছিল জার্মানির ফ্র্যাঙ্ক ফারিয়ানের হাত ধরে। ১৯৪১ সালে জন্ম নেওয়া ফারিয়ান ১৯৭৪ সালে ‘বেবি, ডু ইউ ওয়াননা বাম্প’ রেকর্ড করে ‘বনি এম’ ছদ্মনামে প্রকাশ করেন। গানটি ইউরোপের ক্লাবগুলোয় হিট হয়ে গেলে তিনি চারজন ক্যারিবীয় শিল্পী—লিজ মিচেল, মার্সিয়া ব্যারেট, মেইজি উইলিয়ামস এবং ববি ফারেলকে নিয়ে ব্যান্ড গড়ে তোলেন।

চারজন শিল্পী মঞ্চে জীবন্ত বনি এম হয়ে দর্শককে মাতাতেন। লিজ মিচেলের শক্তিশালী কণ্ঠ, মার্সিয়ার হারমোনি, মেইজির মোহনীয় উপস্থিতি এবং ববি ফারেলের অ্যারোবেটিক নাচ ব্যান্ডকে আন্তর্জাতিক খ্যাতিতে পৌঁছে দেয়। প্রথম হিট ‘ড্যাডি কুল’-এর পর ‘সানি’, ‘মা বেকার’, ‘বেলফাস্ট’ ব্যান্ডকে ইউরোপের মিউজিক চার্টের শীর্ষে বসিয়েছে।

১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া অ্যালবাম ‘নাইট ফ্লাইট টু ভেনাস’-এর গানগুলো যেমন ‘রিভারস অব ব্যাবিলন’ ও ‘ব্রাউন গার্ল ইন দ্য রিং’ বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা এনে দেয়। তবে ১৯৮১ সালের পর ব্যান্ডের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও নতুন ধারার সংগীতের আগমনে তাদের জনপ্রিয়তা কিছুটা ফিকে হয়ে যায়।

ডিজিটাল যুগে বনি এমের আসল পুনর্জন্ম ঘটে। ২০২১ সালে ‘রাসপুতিন’ চ্যালেঞ্জ টিকটকে ভাইরাল হয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে তাদের পরিচিতি ফিরিয়ে আনে। স্পটিফাই ও ইউটিউবে গান শোনার হার বেড়ে যায় বহুগুণ। বিশ্বজুড়ে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকাতেও তাদের গান সমান জনপ্রিয়।

আজও বনি এমের গান গল্পভিত্তিক, সহজ ও আকর্ষণীয় সুরের। ‘রাসপুতিন’ ইতিহাসের চরিত্র, ‘মা বেকার’ গ্যাংস্টারের গল্প, ‘রিভারস অব ব্যাবিলন’ বাইবেলের আবহ তুলে ধরে। ভাষা বা সংস্কৃতির সীমানা পেরিয়ে মানুষের মনকে উৎফুল্ল করার ক্ষমতা রাখায় ৫০ বছর পরও বনি এম প্রাসঙ্গিক।