দেশে ফার্মাসিস্টদের আধুনিক বেতন কাঠামো নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের বৃহত্তর সংগঠন বাংলাদেশ ফার্মাসিস্টস ফোরাম।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত ওয়াটারফল কনভেনশন হলে র্যালি, আলোচনা সভা ও সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করা হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি আজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান তানভীর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. সেলিম রেজা, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক এবং ফার্মাকোভিজিল্যান্স বিভাগের প্রধান ডা. আকতার হোসেন, ফার্মেসি কাউন্সিল অব বাংলাদেশের উপ-পরিচালক আসিফ হাসান প্রমুখ।
সংগঠনের সভাপতি আজিবুর রহমান বলেন, দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট এবং হাসপাতাল ফার্মাসিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন করতে হবে। পাশাপাশি দেশে পেশাগতভাবে নিয়োজিত সকল ফার্মাসিস্টের বেতন কাঠামো উন্নত করা অত্যাবশ্যক।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ ফার্মাসিস্ট শিল্পখাতের শিল্প ফার্মাসিস্ট হিসেবে কর্মরত। তাদের বেতন কাঠামোর উন্নতি এবং জীবনমান বৃদ্ধির জন্য প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের মালিকদের আরও যত্নশীল হওয়া দরকার।
সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান তানভীর ফার্মাসিস্টদের অধিকার আদায়ে সংগঠিত সকল কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি হাসপাতালগুলোতে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগ এবং ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে ফার্মাসিস্টদের আধুনিক বেতন কাঠামো নিশ্চিত করতে জোর দাবি জানান।
অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহসভাপতি আনোয়ার মাজিদ তারেক, সহসভাপতি জাকারিয়া ফারুকী, সহসভাপতি সোহেল বিন আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শারমিন আফরোজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মরুজ্জামান খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসেন শুভ, অর্থ সম্পাদক আবুল ফজল, প্রচার সম্পাদক মমিনুল ইসলাম, ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মামুন গাজী, এবং কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ আরিফ খান।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সরকার ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রতি ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেন এবং দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বিশেষ দাবি
১. সারাদেশের সকল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট নিয়োগ।
২. সকল হাসপাতালে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের তত্ত্বাবধানে চব্বিশ ঘণ্টা হাসপাতাল ফার্মেসি চালু।
৩. ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে ফার্মাসিস্টদের জন্য মানসম্মত বেতন কাঠামো ও মূল্যায়ন নিশ্চিত।
৪. সারাদেশে কমিউনিটি ফার্মেসি নেটওয়ার্ক গঠন ও শুধু গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট পরিচালিত ফার্মেসিকেই স্বীকৃতি প্রদান।
৫. প্রেসক্রিপশন ব্যতীত ঔষধ বিতরণ রোধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ।
৬. “ফার্মাসিস্ট মানেই গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট” – পেশাগত স্বীকৃতি ও ফার্মেসি কারিকুলাম আধুনিকায়ন।
ফোরামের নেতৃবৃন্দ বলেন, এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশে ঔষধ ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে এবং স্বাস্থ্যখাতের গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে।