পুরো মাসজুড়ে বাজারে সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাধ্য হয়ে ক্রেতাদের কেনার পরিমাণ কমিয়ে ২৫০ থেকে ৫০০ গ্রামে নামাতে হচ্ছে। সবজির এমন চড়া দামে হতাশ তারা।

শুক্রবার রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। সপ্তাহের ব্যবধানে দামে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শিম—কেজিপ্রতি ২০০ টাকা। ভালো জাতের গোল বেগুনের দাম ১৫০ টাকা কেজি। টমেটো ও গাজরও বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকার ওপরে।

উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা সুমনা আক্তার রুবি বলেন, “একটা গোল বেগুনই ২৫০ গ্রামের ওপরে হয়। প্রতি পিসের দাম পড়ে ৪০–৫০ টাকা। বাধ্য হয়ে দুইটির বেশি বেগুন কেনা যায় না।”

আরেক ক্রেতা মনসুর আহমেদ বলেন, “শিম ২৫০ গ্রাম ৫০ টাকা। টমেটোর দামও প্রায় একই। ৫০০ টাকায় চারজনের পরিবারে দুই দিনের সবজি হয় না।”

অন্যান্য সবজির মধ্যে বরবটি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০–১২০ টাকায়। ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স ৮০–১০০ টাকা কেজি। লাউ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১০০–১২০ টাকায়, চালকুমড়া ৫০–৭০ টাকায়।

বিক্রেতারা জানান, আগে আধা কেজির নিচে সবজি বিক্রি না করলেও এখন ক্রেতাদের চাহিদার কারণে ২৫০ গ্রাম করেই বিক্রি করতে হচ্ছে। মতিঝিল এজিবি কলোনির সবজি বিক্রেতা আসাদুল বলেন, “পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেশি। আগের মতো সরবরাহও নেই। বাধ্য হয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, বিক্রিও হচ্ছে কম।”

সবজির পাশাপাশি শাকের দামও বেড়েছে। এক মাস আগে আঁটিপ্রতি শাকের দাম ছিল ১০ টাকা, এখন তা দাঁড়িয়েছে ২০ টাকায়। কলমি, পালং ও ডাঁটা শাক বিক্রি হচ্ছে আঁটিপ্রতি ২০ টাকায়, আর লাউশাক, কুমড়াশাক ও পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে।

তবে কারওয়ান বাজারের পাইকারি আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় পাইকারিতে সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০–১৫ টাকা কমেছে। তবে এর কোনো প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে।

সবজির পাশাপাশি বেড়েছে ছোট মাছের দামও। কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০০–৮০০ টাকায়, নদীর ছোট চিংড়ি ১ হাজার–১ হাজার ২০০ টাকায়, দেশি কৈ ৮০০–১ হাজার টাকায়, পুঁটি মাছ ৬৫০–৭৫০ টাকায় এবং ঘুনসে ৭০০ টাকায়।

বাজারে ইলিশের সরবরাহ থাকলেও দাম বেশির ভাগ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। বড় সাইজের ইলিশ কেজিপ্রতি ২ হাজার ২০০–২ হাজার ৫০০ টাকা, মাঝারি ১ হাজার ৮০০–২ হাজার টাকা এবং ছোট সাইজের ইলিশ ১ হাজার ২০০–১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজারে মুরগির দাম অপরিবর্তিত। সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি ৩০০–৩২০ টাকা, ব্রয়লার ১৭০ টাকা এবং দেশি মুরগি স্থানভেদে ৫৫০–৬৫০ টাকা। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৫০–৮০০ টাকায়, খাসি ১ হাজার–১ হাজার ২০০ টাকায়।

ক্রেতারা বলেন, বাজারে সবজির দাম না কমলে খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে। মাসিক আয়ের বড় অংশই এখন বাজার খরচে চলে যাচ্ছে।