আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার (২ অক্টোবর) ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, জো বাইডেন প্রশাসনের চেয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি ভিন্ন। তারা বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না।

তবে, ১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাতে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই করতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এর আগে একতরফাভাবে আয়োজিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তখন মার্কিন অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) নামের দুটি সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছিল।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপিসহ দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো। তখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছিলেন, যারা নিজ দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের ওপর ভিসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি আরও বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন জানায় যুক্তরাষ্ট্র। কাজেই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে এই নীতি ঘোষণা করা হয়েছে।

১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ

এদিকে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ইইউর পক্ষ থেকে ইসিকে সমঝোতা স্মারকের একটি খসড়া দেওয়া হয়েছে। তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে মোট ১৫০ জন পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায়।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, যে খসড়াটি দেওয়া হয়েছে, সেটি পর্যালোচনা করে ইসি স্বাক্ষরের বিষয়ে এগোবে।

প্রতিনিধিদল কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন, ‘তারা (ইইউ) আমাদের সঙ্গে একটি এমওইউ করবেন। ফরেন মিনিস্ট্রি, আমাদের সঙ্গে এবং ইইউ—একটি ত্রিপক্ষীয় এমওইউ হবে, যার ধারাবাহিকতায় তাদের প্রতিনিধিদল আসবে।’

ইসি সচিব জানান, প্রতিনিধিদল ধারণা দিয়েছে, ১৫০ জনের মতো পর্যবেক্ষক আসবেন। তবে সবাই একসঙ্গে আসবেন না; ধাপে ধাপে আসবেন।

সাধারণত নির্বাচনের আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আবেদন আহ্বান করে ইসি। এজন্য সমঝোতা স্মারক করা হয় না। এবার কেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকের জন্য এমওইউ প্রয়োজন, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা তাদের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)। সে অনুযায়ী আমাদের একটি খসড়া দেওয়া হয়েছে।’

আগে কখনো এমন এমওইউ করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, তিনি আগে নির্বাচন কমিশনে কাজ করেননি, তাই তাঁর পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।

খসড়াতে কী আছে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, তিন মিনিট আগে তিনি খসড়াটি পেয়েছেন। তাঁর স্মৃতিশক্তি এত ভালো নয় যে ফটোগ্রাফিক মেমোরি থেকে বলতে পারবেন। ইইউর প্রতিনিধিদল যে খসড়াটি দিয়েছে, ইসি সেটি পর্যালোচনা করবে এবং কোনো পর্যবেক্ষণ থাকলে তা জানানো হবে।