পাকিস্তানের বিমান হামলায় আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে অন্তত তিন ক্রিকেটার নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। নিহতদের মধ্যে আছেন স্থানীয় ক্রিকেটার কাবির, সিবগতুল্লাহ ও হারুন।

এক শোকবার্তায় এসিবি জানায়, নিহত ক্রিকেটাররা পাকতিকার উরগুন থেকে শারানা এলাকায় প্রীতি ম্যাচে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। খেলায় অংশ শেষে উরগুনে ফিরে আসার পর একটি জমায়েতে তাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। এতে মোট আটজন প্রাণ হারান।

এ ঘটনাকে পাকিস্তানি শাসকদের পরিচালিত ‘কাপুরুষোচিত আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছে আফগান ক্রিকেট বোর্ড।

এনডিটিভি জানিয়েছে, নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

এসিবি শুক্রবার রাতে এক্স পোস্টে জানিয়েছে, ‘পাকিস্তানি শাসকদের কাপুরুষোচিত হামলায় পাকতিকা প্রদেশের উরগুন জেলার সাহসী ক্রিকেটারদের শহীদ হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।’

ক্রিকেটারদের প্রতিক্রিয়া

আফগানিস্তানের টি–২০ দলের অধিনায়ক রাশিদ খান পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘এই ট্র্যাজেডিতে নারী, শিশু এবং সেই তরুণ ক্রিকেটারদের জীবন গেছে, যারা বিশ্ব মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্বের স্বপ্ন দেখত।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলা একেবারেই অনৈতিক ও বর্বরোচিত। এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন, যা উপেক্ষা করা যায় না। পাকিস্তানের বিপক্ষে না খেলার এসিবির সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। আমাদের জাতীয় মর্যাদা সবকিছুর ঊর্ধ্বে।’

আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী বলেন, ‘এটি শুধু পাকতিকা নয়, পুরো আফগান ক্রিকেট পরিবারের জন্যই শোকের ঘটনা।’

পেসার ফাজালহাক ফারুকি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নিপীড়কদের হাতে নির্দোষ বেসামরিক নাগরিক ও আমাদের ক্রিকেটারদের এ হত্যা জঘন্য ও ক্ষমাহীন অপরাধ।’

সীমান্তে উত্তেজনা

আফগান সংবাদমাধ্যমের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, শুক্রবার পাকিস্তান আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশের উরগুন ও বারমাল জেলায় একাধিক বিমান হামলা চালায়। এতে বহু বেসামরিক মানুষ হতাহত হন।

তোলোনিউজের সূত্রে জানা গেছে, কাবুল সরকার এ ঘটনাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন হিসেবে অভিযোগ করেছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতির মধ্যেই এই প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়। পাকিস্তান দোহা আলোচনার আগ পর্যন্ত অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল, যা কাবুল মেনে নেয়। দুই পক্ষের মধ্যে নতুন আলোচনা শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।