নারী ক্রিকেটার জাহানারা আলমের যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগের দুই দিন পর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। নারী ক্রিকেটে দেশের সফলতম পেসারের এসব অভিযোগ যাচাই করবে তিন সদস্যের এই কমিটি।

কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তারিক উল হাকিমকে। অন্য দুই সদস্য হলেন বিসিবির একমাত্র নারী পরিচালক রুবাবা দৌলা ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা। ব্যারিস্টার শুক্লা একইসঙ্গে বাংলাদেশ উইমেন’স স্পোর্টস ফেডারেশনের সভাপতি।

জাহানারা সম্প্রতি ক্রীড়া সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিমের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের নারী বিশ্বকাপ চলাকালে নিউজিল্যান্ডে দলের নির্বাচক ও ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম তাকে কুপ্রস্তাব দেন। শুধু তাই নয়, ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নানা সময়ে মানসিক নির্যাতন ও অপমানজনক আচরণের শিকার হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, নারী ক্রিকেটের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদও তাকে হেনস্তা করেছিলেন। তৌহিদ মাহমুদ একসময় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন।

এ ছাড়া টিম ম্যানেজমেন্ট ও বোর্ডের আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন জাহানারা। তিনি জানান, এসব বিষয় একাধিকবার নারী বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান শফিউল ইসলাম চৌধুরীকে অবহিত করলেও তিনি কেবল সাময়িক সমাধান দিয়েছিলেন। এমনকি বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীকে বিস্তারিত লিখিত জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগের পর বিসিবি জানায়, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে এমন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তবে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল আইসিসি সভা শেষে দেশে ফেরার পর শনিবার রাতে কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশের হয়ে ৫২ ওয়ানডে ও ৮৩ টি–টোয়েন্টি খেলা জাহানারা আলম নারী ক্রিকেটে দেশের সবচেয়ে সফল পেসার। তিনি একসময় জাতীয় দলের অধিনায়কও ছিলেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ক্লাব ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি কোচিং কোর্স করছেন।

জাহানারা দাবি করেন, নারী ক্রিকেটে আরও অনেকে হয়রানির শিকার হলেও ভয় বা অনিশ্চয়তার কারণে মুখ খোলেন না। প্রথম বিভাগের এক নারী ক্রিকেটারের যৌন হেনস্তার ঘটনাও উল্লেখ করেছেন তিনি।