সারাদিন সড়ক অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল, লাঠিচার্জ, আটক ও আহতের ধকল শেষে দাবি না মানা পর্যন্ত সোমবার সকাল থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। পাশাপাশি তাঁরা সারারাত কাটাচ্ছেন শহীদ মিনারে।
রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মূল বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতার দাবিতে অবস্থান নেন তাঁরা। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও ঘোষিত কর্মবিরতি চলবে।
ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার থেকে দেশের সব এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে। সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের অভিযোগ, দেশের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারী মাসে মাত্র এক হাজার টাকা করে বাড়িভাড়া ভাতা পান। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে এই ভাতা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছেন। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একাধিকবার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল।
তবে গত ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে অর্থ মন্ত্রণালয় শতাংশ হারে বাড়িভাড়া না বাড়িয়ে মাত্র ৫০০ টাকা বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষকরা। প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা রবিবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
রবিবার সকাল ১০টা থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। দুপুরে তাঁদের কয়েকজন প্রতিনিধিকে ডেকে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসায় শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
একদল শিক্ষক সড়ক ছেড়ে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন, আরেক দল প্রেস ক্লাবের সামনেই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান। একপর্যায়ে পুলিশ প্রেস ক্লাবের সামনে থাকা শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়। লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ছুড়ে তাঁদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
পুলিশের ধরপাকড়ে তিন শিক্ষক আহত হন। আটক করা হয় ছয়জনকে। পরে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকদের ধরপাকড়ের ছবি ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। শিক্ষকদের ওপর এমন আচরণের নিন্দা জানান অনেকেই।
বর্তমানে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, পলিথিন বিছিয়ে আজকের রাত সেখানেই কাটাবেন।
পূর্বের পোস্ট :