ছুটির দিনেও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গেটে ছিল কড়া পুলিশি পাহারা। কারণটা অনুমান করতে কারও অসুবিধা হয়নি—বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা।

মঙ্গলবার দুপুরেই বিসিবির নির্বাচন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করা কয়েকজন প্রার্থী ছুটে যান মিরপুর শেরেবাংলায়। কেউ বললেন প্রতিবাদ সমাবেশ, কেউ আবার বললেন অন্য কিছু হতে পারে। এ সময় বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করার জন্য আসেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ও মির্জা ইয়াসির আব্বাস। তাঁরা প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান করলেও সিইওর সঙ্গে দেখা হয়নি। সরকারি ছুটির দিনে সেটিই স্বাভাবিক ছিল।

পরে সাংবাদিকদের মাধ্যমে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কাছে তিন দফা দাবি জানান ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা আরেক প্রার্থী আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের মির্জা ইয়াসির আব্বাস এবং ঢাকা বিভাগ থেকে পরিচালক পদের প্রার্থী আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ফুয়াদ রেদুয়ান।

রফিকুলের দাবির মধ্যে রয়েছে—বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ কিছুদিন বাড়ানো, প্রয়োজনে অ্যাডহক কমিটি গঠন, এবং নির্বাচন পিছিয়ে নতুন সময়সূচি নির্ধারণ। তিনি বলেন, ‘এখানে ভালো ভালো ক্রীড়া সংগঠকেরা অনুপস্থিত আছেন। আমরা চাই, তাঁরা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সেটার কিছু ব্যবস্থা করা।’

ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াকে ক্রীড়াঙ্গনের ‘অভিভাবক’ উল্লেখ করে রফিকুল আরও বলেন, ‘আমরা এই দাবিগুলো ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে জানাতে চাই। উনি নিশ্চয়ই যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন, যাতে ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ক্রিকেট যেন ক্রিকেটের জায়গাতেই থাকে।’

গতকাল জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ মোট ১৬ জন প্রার্থী বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। তাঁদের দাবিও একই কি না—জানতে চাইলে রফিকুল বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেটের স্বার্থে সবার পক্ষ থেকেই কথাটা বলছি।’

রফিকুল আরও জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ ঝুলে গেছে। এতে বিভিন্ন ক্লাবের ক্রিকেটাররা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে কোয়াবের মাধ্যমে তামিমের কাছে মতামত জানিয়েছেন।

মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরও দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ বিষয়ে কারও আপত্তি থাকলে ই–মেইলের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে জানানোর সুযোগ ছিল। তবে কেউ করেছেন কি না, তা জানা যায়নি। রফিকুলের মতে, সময়টা যদি আরও বাড়ানো যেত, তাহলে সবার সম্পৃক্ততা আরও নিশ্চিত হতো।

প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে ভুল করেছেন কি না—এমন প্রশ্নে রফিকুল বলেন, ‘আমি তা বলছি না। এটা একটা প্রতিবাদস্বরূপ করেছি। তবে এর থেকে উত্তরণের পথ আছে। আমরা চাই, সময় বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করা হোক। কয়েকটা প্রস্তাবনার মধ্যে এটাও আছে। নির্বাচনটা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।’