দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী ড. শহীদুল আলমসহ সব অ্যাক্টিভিস্টকে অপহরণ করে ইসরায়েলের একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষক ও দৃকের পরিচালনা পরিষদ সদস্য সায়দিয়া গুলরুখ।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকাল সোয়া চারটায় স্ট্রিমকে তিনি বলেন, “ঘণ্টাখানেক আগে আমরা জানতে পেরেছি যে তাকে একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
শহীদুল আলমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এর বাইরে তার বিষয়ে আমাদের কাছে আর কোনো তথ্য নেই। কারণ, ইসরায়েলি বাহিনী তার কাছে আসার আগেই তিনি ফোন, ল্যাপটপসহ সব ডিভাইস পানিতে ফেলে দিয়েছেন। এভাবেই কথা ছিল। আবার যখন আইনজীবীদের সঙ্গে তাকে দেখা করতে দেবে, তখন হয়তো জানতে পারব। তার আগে আমাদের আর জানার কোনো উপায় নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, তারা ইচ্ছা করেই ধীরে ধীরে বন্দরের দিকে যাচ্ছে, যাতে সন্ধ্যার পরে পৌঁছায়। এর মানে, আরও আট থেকে দশ ঘণ্টা পার হওয়ার আগে তার বিষয়ে কিছু জানা যাবে না।”
কোন বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা জানা সম্ভব হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কোন বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেটাও আমরা জানি না। তবে এর আগে ফ্রিডম ফ্লোটিলার অ্যাক্টিভিস্টদের আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শহীদুল আলমসহদের বহনকারী কনশেন্স জাহাজ কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।”
এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দৃক জানিয়েছে, বুধবার (৮ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় গাজা থেকে ১২০ নটিক্যাল মাইল (২২০ কিলোমিটার) দূরে ফ্রিডম ফ্লোটিলার কনশেন্সসহ সর্বমোট ৮টি জাহাজকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় সহিংসভাবে দখল করেছে ইসরায়েলের বাহিনী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “আজ ভোরে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে, কনশেন্সের গাজাগামী যাত্রীদের ওপর আক্রমণ চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই সময়ে ইসরায়েলি নৌবাহিনী থাউজেন্ডস ম্যাডলিনসের পালতোলা নৌকাগুলিও দখল করে। এই অবৈধ অভিযানে আলোকচিত্রী, লেখক ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আলমসহ সব অ্যাক্টিভিস্ট, লেখক-গবেষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, মানবাধিকারকর্মী এবং জাহাজের সব নাবিককে অপহরণ করা হয়েছে।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আদালাহ, দ্য লিগাল সেন্টার ফর আরব মাইনরিটি রাইটস ইন ইসরায়েল—যারা সব অপহৃত ফ্রিডম ফ্লোটিলা অ্যাক্টিভিস্টদের হয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছেন—তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, এই মুহূর্তে ইসরায়েলি নৌবাহিনী অপহৃতদের দেশটির একটি বন্দরে নিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ-সমর্থিত গণহত্যা ও বেআইনি গাজা অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে ফ্রিডম ফ্লোটিলার এই জাহাজগুলিকে দখল করার কোনও আইনি অধিকার ইসরায়েলের নেই। আন্তর্জাতিক জলসীমায় নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের উপর ইসরায়েলের আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের চূড়ান্ত লঙ্ঘন।
পূর্বের পোস্ট :