রাজধানীর আগারগাঁও এখন যেন ‘কেকপট্টি’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ‘মেট্রোর কেকপট্টি স্টেশন’-এর এআই-নির্মিত ছবি। মজার এই নামকরণের পেছনে কারণও আছে—নির্বাচন ভবনের সামনের সড়কে রোজ বিকেলে বসছে কেকের মেলা। হাজারো মানুষ সেখানে হাজির হচ্ছেন ঘরে বানানো কেকের স্বাদ নিতে।
রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারী-পুরুষ বিক্রেতারা আসছেন নিজ হাতে বানানো কেক নিয়ে। কেউ টেবিলে, কেউ গাড়ির বনেটে সাজিয়ে বিক্রি করছেন নানা স্বাদের কেক—ভ্যানিলা, ওভারলোডেড চকলেট, রসমালাই, ব্লুবেরি, এমনকি দুধ সাদা ভেলভেট কেকও।
সুলভ দামে কেক খাওয়ার সুযোগ আর ঘোরাঘুরির আনন্দ মিলিয়ে এই সড়ক এখন এক উৎসবমুখর জায়গা। স্থানীয়রা বলছেন, গত দুই বছর ধরেই এখানে খাবারের দোকান বসত, তবে গত কয়েক সপ্তাহে ‘ভাইরাল কেক’-এর কারণে রীতিমতো মেলা বসে গেছে।
সোমবার বিকেলে দেখা গেল ‘সুগার হুইল’ নামের এক নারী বিক্রেতা গাড়ির বনেটেই কেক বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, ‘নবম দিন হলো আসছি, প্রতিদিনই সব বিক্রি হয়ে যায়।’
একইভাবে ‘রূপস কেক জোন’-এর এক নারী উদ্যোক্তা জানান, প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় কেক বিক্রি করেন, চাহিদা এত বেশি যে তৈরির সঙ্গে বিক্রি চলছে সমানতালে।
এখানকার বিক্রেতারা সবাই বাসায় কেক বানিয়ে বিকেলে হাজির হন আগারগাঁওয়ে। তবে জায়গা দখল নিয়ে মাঝে মধ্যেই ঝামেলা হচ্ছে—সবাই চায় রাস্তার শুরু বা শেষ প্রান্তে বসতে, কারণ সেখানে ক্রেতার ভিড় বেশি।
ভাইরাল জাকির আর ‘সিমি আপা’ এখন এই কেকমেলার তারকা বিক্রেতা। তাঁদের দোকানে এত ভিড় যে ক্রেতাদের জন্য টোকেন ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। ইউটিউবার আর টিকটক নির্মাতারাও প্রতিদিন ভিড় করছেন তাঁদের সাক্ষাৎকার নিতে।
কেক বিক্রেতা মো. কামরুল হাসান জানান, ‘তিন সপ্তাহ হলো এখানে আসি। তখন ৩০-৪০টা দোকান ছিল, এখন শুধু কেকের দোকানই ১০০-এর বেশি।’
ফেসবুকেই এই ভিড়ের সূচনা। ক্রেতাদের বেশিরভাগই বললেন, তাঁরা ভিডিও দেখে এসেছেন কৌতূহলবশত। কেউ ১০০ টাকায় ব্লুবেরি কেক, কেউ ১৫০ টাকায় রসমালাই কেক কিনছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ঘেঁটে দেখা গেছে, কেক বিক্রির এই উন্মাদনায় ভরে গেছে ফেসবুক-ইউটিউব। বিক্রেতারা বলছেন, এই জোয়ার স্থায়ী হবে না—এটা কেবল এক সাময়িক উচ্ছ্বাস।
তবু মানুষ এখন বলছে, আগারগাঁও নয়, নাম হোক ‘কেকপট্টি’। রসিকতার মধ্যেই তারা মজে আছে এই মিষ্টি উন্মাদনায়।
পূর্বের পোস্ট :