স্ত্রী প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েছেন; সঙ্গে নিয়ে গেছেন দুই সন্তান, ৯ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ নিয়ে গ্রামে হাসিঠাট্টা, কটুকথায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন কামাল হোসেন (৩৯)। সব পেছনে ফেলে নতুন করে জীবন শুরু করছেন তিনি। বিয়ে করেছেন নূপুর আক্তারকে। বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখতে নববধূকে এনেছেন হেলিকপ্টারে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কাঠাদিয়া গ্রামে এ দৃশ্য দেখা যায়।

কামালের পরিবার সূত্রে জানা যায়, কাঠাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন পেশায় বেসরকারি সার্ভেয়ার ও জমির ব্যবসায়ী। ১০ বছর আগে তাঁর বিয়ে হয় সাথী আক্তারের (২৮) সঙ্গে। তাঁদের সংসারে রয়েছে দুটি মেয়ে—একজনের বয়স ৮ বছর, অন্যজনের ২।

এরই মধ্যে মুন্সিগঞ্জ শহরের এক বিপণিবিতানে কর্মরত মুন্না নামের এক বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সাথী। গত ১০ আগস্ট সাথী ঘর ছাড়েন এবং পরে কামালকে তালাক দেন।

কঠিন সময়ে কামালের পাশে দাঁড়ান একই গ্রামের তরুণী নূপুর আক্তার (২৪)। গতকাল শুক্রবার দুপুরে হেলিকপ্টারে করে নববধূ নূপুর আসেন কামালের বাড়িতে। বিয়ের আয়োজন ঘিরে গ্রামে তৈরি হয় উৎসবের আমেজ।

কামাল বলেন, ‘একসময় ভেবেছিলাম, এই জীবন আর রাখব না। ঠিক সে সময় ভালোবাসা নিয়ে আমার জীবনে এসেছে নূপুর ও তার পরিবার। তাই দ্বিতীয়বার বিয়েতে রাজি হই। প্রথম স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার আগে ভেবেছিলাম, বিবাহবার্ষিকীতে হেলিকপ্টারে ঘুরতে যাব। যেহেতু সে পালিয়ে গেছে, আর নূপুর সব জেনে-শুনেই বিয়েতে রাজি হয়েছে, তাই তাকে সম্মান জানিয়ে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে এসেছি।’

নূপুর আক্তার বলেন, ‘কামাল একজন ভালো মানুষ। তার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে, অবিচার হয়েছে। এটা যেন কারও সঙ্গে না হয়। সবকিছু জেনেই আমি বিয়েতে রাজি হয়েছি।’

নূপুরের মামা রিমন দেওয়ান বলেন, ‘আমরা কামালকে ছোটবেলা থেকে চিনি। তিনি ভালো মানুষ। সে কারণেই আমরা নূপুরকে তাঁর হাতে তুলে দিয়েছি। গ্রামের মানুষ বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই দেখছেন।’