প্রথমবারের মতো নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) নিজস্ব অর্থায়নে দুটি আধুনিক বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ কিনেছে। এ লক্ষ্যে বিএসসি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসির মধ্যে জাহাজ সরবরাহ চুক্তি সই হয়েছে।

রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম বিএসসি নিজস্ব অর্থায়নে জাহাজ কিনছে। নিঃসন্দেহে এটি দেশের শিপিং শিল্পে এক যুগান্তকারী মাইলফলক। নতুন দুটি জাহাজ যুক্ত হলে বছরে ১৫০ কোটি টাকা আয় বাড়বে। বিএসসির পরিবহন সক্ষমতা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ডিডব্লিউটি বৃদ্ধি পাবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘গ্রিন শিপিং’-এর মর্যাদা পাবে, যা দেশের সমুদ্রবাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হবে।

বিএসসি জানিয়েছে, নতুন জাহাজগুলোতে জ্বালানি খরচ কম, পরিচালন দক্ষতা বেশি। প্রধান ইঞ্জিন থেকে নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে, যা পরিবেশ দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে। নকশা ও প্রযুক্তিগত সমাধানগুলো জ্বালানি সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশগত মানদণ্ডসম্মত। এগুলো আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থার সর্বশেষ পরিবেশগত মানও পূরণ করে।

জাহাজগুলোতে উচ্চমানের ইউরোপীয় ও জাপানি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে। জার্মান লাইসেন্সে চীনে এগুলো নির্মিত হয়েছে। জাহাজে স্পেনের পাম্প ও নরওয়ের কম্প্রেসার বসানো হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম জাহাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরে এবং দ্বিতীয়টি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে বিএসসিকে হস্তান্তর করা হবে। চলতি বছরের মধ্যেই বিএসসির জন্য আরও তিনটি জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া চলছে। সব মিলিয়ে বর্তমান সরকারের সময়ে বিএসসির জন্য পাঁচটি জাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

নতুন জাহাজ যুক্ত হলে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন কেবল আয়েই লাভবান হবে না, বরং আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাজারে ‘গ্রিন শিপিং নেশন’ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে।