গেল ১৫ বছরে বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রিকে প্রশ্ন না করায় ‘অবাক’ হওয়ার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, আপনাদের মুখে প্রশ্নটি তুলে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আপনারা কেউ তা করেননি।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন যে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তারা আইনি দিক খতিয়ে দেখছেন; বাংলাদেশকে কিছু জানিয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়ে আমরা আমাদের আইনি দিক অনুসরণ করেছি এবং আদালতের নির্দেশেই আমরা ফেরত চেয়েছি। তারা (ভারত) তাঁদের মতো করে দেখুক; আমাদের এখন পর্যন্ত তারা কিছু জানায়নি।

কিন্তু আপনারা যারা ভারতে গিয়েছিলেন, তাদের বিষয়ে আমার একটি অবজারভেশন আছে। যেহেতু আপনি বিষয়টি তুলেছেন, সেহেতু বলছি। নাহলে প্রসঙ্গটি তুলতাম না। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আপনাদের মুখে একটি প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন; আপনারা সেই প্রশ্নটি করেননি কেউ,’ তিনি যোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন যে তারা একটি স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন চান। আপনাদের মুখে প্রশ্নটি তুলে দেওয়া হয়েছিল যে—আপনারা এই কথাটি গত ১৫ বছর কেন বলেননি? আগের নির্বাচন কি এই ফর্মুলায় সঠিক ছিল? আপনারা কেউ এই প্রশ্নটি তুলেননি।’

আমি বরং অবাক হয়েছি যে, আপনাদের মধ্যে অনেক সিনিয়র পুরনো সাংবাদিক ছিলেন, কিন্তু কেউ এই প্রশ্নটি তুলেননি। যেহেতু তিনি (ভারতের পররাষ্ট্র সচিব) সুযোগ দিয়েছেন, আপনারা যদি বিব্রত করতে না চান, তখনও সুযোগে প্রশ্নটি করা উচিত ছিল,’ বলেন তিনি।

এসময় রাষ্ট্রীয় দাওয়াতে জাকির নায়েক দেশে আসছেন কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইসলামিক বক্তা জাকির নায়েককে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে—এমন কোনো বিষয় আমার জানা নেই। আমি এতক্ষণই আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম। আমি এরকম কিছু শুনিনি।’

ঢাকায় নিয়োজিত নতুন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সমস্যা সৃষ্টি করে বা বিতর্ক তৈরি করে এমন কেউ এখানে আমন্ত্রণ করা হবে না।’

সম্প্রতি ভারতের নিউ দিল্লির সাউথ ব্লকে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব)-এর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন।

বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন দেখতে আগ্রহী ভারত, যেখানে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ভারত প্রস্তুত। আগামী নির্বাচনের পর জনগণের সমর্থন নিয়ে যেই সরকার গঠন হোক, তাদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রাখতে ভারত আগ্রহী। ভারত আশা করে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।