ঢাকার সাভারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ, ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৬ অক্টোবর) রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বিরুলিয়া ইউনিয়নের খাগান এলাকায় এ সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছেন সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া ফাঁড়ির এসআই আব্দুল ওহাব।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানা গেছে, সন্ধ্যায় ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস’ নামের একটি ভবনের সামনে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী লাঠিসোঁটা ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের একটি বাসায় হামলা চালালে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে, সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের একজন শিক্ষার্থী ভবনের ওপর থেকে থুতু ফেললে তা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর গায়ে লাগে—এ নিয়েই বিরোধের সূত্রপাত। প্রথমে বিষয়টি মীমাংসা হলেও পরে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা চালায় বলে তাদের অভিযোগ।
তাদের ভাষ্য, এ সময় প্রশাসনিক ভবন, ক্যান্টিন ও হল ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। আগুন দেওয়া হয় তিনটি বাস, একটি প্রাইভেটকার ও দুটি মোটরসাইকেলে। ভাঙচুর করা হয় আরও বেশ কিছু যানবাহনে। সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীরা ‘পরিকল্পিতভাবে’ ক্যাম্পাসে হামলা চালিয়ে সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সিটি ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার আকতার হোসেন রাত সাড়ে ৪টার দিকে বলেন, ‘সব শেষ করে ফেলেছে। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আমাদের ক্যাম্পাসে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং বেশ কিছু গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।’
সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া ফাঁড়ির এসআই আব্দুল ওহাব বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথমে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। তবে মীমাংসার প্রক্রিয়ায় সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করলে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়।’
তিনি আরও জানান, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। সংঘর্ষে কেউ আহত হয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে সিটি ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পূর্বের পোস্ট :