বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। রোববার (২৬ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোনথা’। এটি থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম, যার অর্থ ‘সুন্দর বা সুবাসিত ফুল’।
আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করবে। তিনি বলেন, ‘মোনথা সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানবে না, তবে এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হতে পারে।’
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোনথা’ দক্ষিণপশ্চিম ও দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। রোববার রাত ৩টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১,৩৬০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ১,৩০০ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ১,২৮০ কিলোমিটার এবং পায়রা থেকে ১,২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার রাত নাগাদ ‘মোনথা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি মঙ্গলবার সন্ধ্যা বা রাতে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তখন বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার হতে পারে, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটারের বেশি হলে সেটিকে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শক্তির ভিত্তিতে ঘূর্ণিঝড়কে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে—
ঘণ্টায় ৬২–৮৮ কিলোমিটার: ঘূর্ণিঝড়,
৮৯–১১৭ কিলোমিটার: প্রবল ঘূর্ণিঝড়,
১১৮–২১৯ কিলোমিটার: হারিকেনের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়,
২২০ কিলোমিটার বা তার বেশি: সুপার সাইক্লোন বা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়।
এর আগে চলতি মৌসুমের শুরুতে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ সৃষ্টি হয়েছিল, তবে সেটির তেমন কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি।
পূর্বের পোস্ট :