আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। এটা ঐকমত্য কমিশনের সনদেরই অংশ এখন। এই ঘোষণা আমাদের রক্ষা করতে হবে। এটা কথার কথা নয়, এটা ফেব্রুয়ারিতেই হবে এবং উৎসবমুখর নির্বাচন হবে।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আজ বুধবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনারা যেমন সবাই মিলে সনদ তৈরি করেছেন, আমাদের সরকারের দায়িত্ব হলো সবাই মিলে উৎসবমুখর নির্বাচনটা করে দেওয়া। তাহলেই আমাদের কাজ পরিণত হবে।’

তিনি জানান, রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানাতেই তিনি বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। ‘বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে কঠিন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশন সন্তোষজনকভাবে এর সমাপ্তি এনেছে— এজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ধন্যবাদ জানাই,’ বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

জুলাই সনদ রচনাকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান–পরবর্তী অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্র–জনতার যে অভ্যুত্থান, এই অভ্যুত্থানের পরবর্তী অধ্যায় সঠিকভাবে রচিত হলো। যে সংস্কারের কথা আমরা মুখে বলে যাচ্ছিলাম, আপনারা প্রকৃত সংস্কারটি করে দেখিয়েছেন। জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সারা জাতি উৎসবে শরিক হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই সনদ জাতির জন্য একটি বড় সম্পদ। ‘যে কলম দিয়ে স্বাক্ষর করা হবে, সেগুলো জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। মানুষ তা ভুলতে পারবে না। মাসের পর মাস বৈঠক করে যখন মনে হয়েছিল এটা অসমাপ্ত থেকে যাবে, তখনই সেটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, সরকার জুলাই সনদ সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেবে। ‘যেসব দলিল তৈরি হয়েছে, সেগুলো সহজ ভাষায় প্রচার করা হবে, যেন সবাই বুঝতে পারে কেন একমত হয়েছি,’ বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘যেসব বিতর্ক হয়েছে, সেগুলো ভিডিও করে ও বই আকারে সংরক্ষণ করা হবে, যেন এগুলো জাতির সম্পদ হিসেবে থাকে।’

সনদ ও নির্বাচনকে অবিচ্ছেদ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, উত্তরণের পথও জুলাই সনদে নির্ধারিত আছে। ‘রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেভাবেই রূপান্তর হবে। নির্বাচনের মাধ্যমেই সেই রূপান্তর ঘটবে,’ বলেন তিনি।

আগামী ১৭ অক্টোবরের জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা উৎসবমুখরভাবে সেখানে যাব, দলিলে সই করব এবং উৎসব করব। সারা জাতি এতে শরিক হবে। জাতির জন্য এটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’