জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে—এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘এই নির্বাচন ভালো না হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সিইসি বলেন, ‘এই নির্বাচনটা দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ করে দেবে। নির্বাচন ভালো না হওয়ার কোনো সুযোগ জাতি হিসেবে আমাদের কাছে নেই। সুতরাং সবাই মিলে নির্বাচনটা করতে হবে। এটা একটি জাতীয় নির্বাচন, জাতীয়ভাবেই আমরা করতে চাই। নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে এককভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।’

ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা হতে পারে। নির্বাচন কমিশন এর আগে থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে সংলাপ পর্ব শুরু হয়। পূজার ছুটির পর সোমবার সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং মঙ্গলবার নারী নেত্রী ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। চলতি মাসে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বসার কথা রয়েছে কমিশনের।

সংলাপে সিইসি সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা মানুষের মতামত তৈরি করার কারিগর। আমরা সেই সুযোগটা নিতে চাই। এই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘একাধিকবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার মাধ্যমে ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে—এটা খুব দরকার ছিল।’

প্রবাসী ও নিজ উপজেলার বাইরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের সুযোগ বাস্তবায়নের উদ্যোগের কথাও জানান সিইসি।

‘পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ এতদিন আইনে থাকলেও আমরা এবার তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি,’ বলেন নাসির উদ্দিন।

নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগগুলোর প্রচারে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে সিইসি বলেন, ‘আপনারা আমাদের সহযোদ্ধা। আমরা চাই, উৎসবের আবহে নির্বাচনটা হোক। ভোটাররা যেন কেন্দ্রে যান, সে জন্য আপনারা আমাদের সাহায্য করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের পরেও যদি আপনাদের কোনো পরামর্শ থাকে, আমাদের জানাবেন। আপনাদের জন্য আমাদের দরজা সব সময় খোলা।’

সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার—আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, বেগম তাহমিদা আহমদ, আব্দুর রহমানেল মাছউদ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মধ্যে কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, যুগান্তরের সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার, ফিনানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, সংগ্রামের সম্পাদক আযম মীর শহীদুল আহসান, নয়া দিগন্তের সম্পাদক মাসুমুর রহৃান খলিলী, খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল, আজকের পত্রিকার সম্পাদক কামরুল ইসলাম, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।