আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ ঘোষণা করেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর দুই শীর্ষ সহকর্মীর বিরুদ্ধে চলমান মামলার রায় ১৭ নভেম্বর ঘোষণা করা হবে।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মোজুমদার এই দিন ঠিক করেছেন। মামলাটি গত বছরের জুলাই বিদ্রোহের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়।
মামলার অপর আসামি হিসেবে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যিনি পরে অভিযোগ স্বীকার করে রাষ্ট্রপক্ষের সহযোগী হন।
মামলার শুনানি শেষ হয় ২৩ অক্টোবর। মামলায় অভিযোগপত্র ১ জুন জমা দেন প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, যেখানে পাঁচটি পৃথক অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার পাঁচটি অভিযোগ
১. প্রাণহানি ও নির্যাতন:
হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক আইজিপি সহ তিনজনকে হত্যাচেষ্টা, নির্যাতন ও অন্যান্য অমানবিক কাজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের পর তারা এই কার্যক্রমে সহযোগিতা ও যোগসাজশ করেছেন।
২. বিক্ষোভ দমন:
হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ছাত্র বিক্ষোভ দমন করতে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি সেই নির্দেশ কার্যকর করেছেন।
৩. ছাত্র হত্যাকাণ্ড – রংপুর:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বিক্ষোভরত ছাত্র আবু সৈয়েদের হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসিকিউটর অভিযোগ করেছেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় হাসিনা নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা কার্যকর করেছিলেন।
৪. চাঁখারপুলে ছয় শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ড:
ঢাকার চাঁখারপুলে ৫ আগস্ট ছয় শিক্ষার্থীকে হত্যার অভিযোগে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, হাসিনার নির্দেশে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
৫. আশুলিয়ায় ছয় শিক্ষার্থীর দগ্ধ হত্যা:
৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে হত্যার পর দগ্ধ করা হয়, আর একটি শিক্ষার্থী জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, হাসিনার নির্দেশে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার আগে নিরাপত্তা বিশেষভাবে বৃদ্ধি করা হয়। দেশের রাজধানী ও আদালত এলাকা জুড়ে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে।
পূর্বের পোস্ট :