আগামী জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কারও সঙ্গে জোট গড়বে কি না, তা নিয়ে কৌতূহলের মধ্যে, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কাউন্সিলের অধিকাংশ সদস্য এককভাবে নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, এনসিপির স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পরিচয় তৈরি এবং ভবিষ্যতে একটি শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এটি প্রয়োজন।
রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্প্রতি প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নির্বাহী কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দলের নির্বাচনী চিন্তা, সম্ভাব্য জোট-সমঝোতা এবং প্রচার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন জানান, দল একটি কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছে। প্রার্থী নির্ধারণ ও মনোনয়ন জমার প্রক্রিয়া নিয়ে নির্বাহী কাউন্সিলে আলোচনা হয়েছে। সভায় বেশিরভাগ সদস্য মত দিয়েছেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে এনসিপি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিক।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে গঠিত তরুণদের দল এনসিপি সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। নতুন দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন নিয়ে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক গ্রহণ করেছে তারা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। দুই মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ ঢাকার বাইরে থাকায় সভায় উপস্থিত ছিলেন না।
নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় অংশ নেওয়া নেতারা জানান, দলের নির্বাচনী কার্যক্রম, দায়িত্ববণ্টন এবং সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে মত এসেছে। অনেক নেতাই বলেছেন, নির্বাচনী আমেজ কাজে লাগিয়ে সারা দেশে সাংগঠনিক ভিত্তি গঠনের সুযোগ রয়েছে।
একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দুই দলই এনসিপিকে সঙ্গে রাখতে চায়। কিন্তু কোনো দলের ছায়ায় কিছু আসনে জয়লাভ দীর্ঘমেয়াদে দলের স্বতন্ত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে জোট হলে অতীত কর্মকাণ্ডের দায়ভার নিতে হবে। তাই স্বতন্ত্র অবস্থান রাখা উত্তম।’
এছাড়া, গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দল, এবি পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের সম্ভাব্য তৃতীয় জোটের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, জোটে অনেক দলের আগ্রহ থাকলেও বিএনপির সঙ্গে সংযুক্তি থাকায় পরিস্থিতি জটিল। এছাড়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ৯ দল যৌথভাবে কিছু করতে পারে কি না, সেই আলোচনাও হয়েছে।
সভায় সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এনসিপি সম্পর্কিত কিছু প্রতিবেদনকে দল ‘ভিত্তিহীন’ হিসেবে দাবি করেছে এবং সেগুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে।
পূর্বের পোস্ট :