প্রায় এক মাস পর কাঁচাবাজার করতে গিয়ে কিছুটা স্বস্তি পেলেন সাফায়েত হোসেন। কারণ, পটল, করলা, শিম, বরবটিসহ কয়েকটি সবজি তিনি পেলেন আগের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে।
শুক্রবার কারওয়ান বাজারে কেনাকাটা শেষে সাফায়েত বলেন, ‘গত এক মাস ধরে শাকসবজির বাজার অত্যন্ত চড়া। এখনও যে অনেক কমেছে তা কিন্তু নয়। তবে দামে কিছুটা স্বস্তি এসেছে বলা যায়।’
সাফায়েত কেনাকাটা করলেন সবজি বিক্রেতা প্রবীর সরকারের কাছ থেকে। সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে স্নাতক করা এই ব্যবসায়ী নিজেই নিজের পরিচয় দিলেন। তিনি বললেন, ‘দাম বেড়ে গেলে আমরাও চাপে পড়ে যাই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি বিক্রি করতে পারিনি। ক্রেতারা মন খারাপ করলেও কিছুই করার নেই। কিনতে তো হয়েছে। এই সপ্তাহে কয়েক ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০/১৫ টাকা করে কমেছে।’
এ বাজারে শিম আগে বিক্রি হচ্ছিল ২০০ টাকা কেজি দরে। শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। ঢেঁড়স ৮০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকায় নেমেছে। ধুন্দল গত সপ্তাহে ৭০ টাকা ছিল, এখন ৬০ টাকা কেজি। করলার কেজি ৬০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় নেমেছে।
কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি পটল ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কয়েক কিলোমিটার দূরে বনশ্রী এলাকায় এসব সবজি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে সেখানেও দাম আগের চেয়ে কমেছে বলে সবজি বিক্রেতা আমির হোসেনের ভাষ্য।
দক্ষিণ বনশ্রী জামে মসজিদের পাশে রাস্তায় ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন আমির। তিনি বলেন, ‘চিচিঙ্গা, কাঁচামরিচ, করলা, ধুন্দল, শিমসহ কিছু সবজির দাম কেজিতে ১০/২০ টাকা করে কমেছে। গত এক মাস ধরেই সবজির দাম বেশ চড়া।’
কারওয়ান বাজারের মসলার বিক্রেতা তুষার শেখও শোনালেন কিছুটা দাম কমার তথ্য। চীন থেকে আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকায়। এই দুটি মসলার দাম অপরিবর্তিত থাকলেও আদার দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে এখন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম কমলেও মাছ, মাংস ও ডিমের দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। কারওয়ান বাজারে লাল ডিমের ডজন ১৩০ টাকা, সাদা ডিমের ডজন ১২৫ টাকা। তবে মহল্লার বাজারে ডিমের ডজন ১৪০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মিঠাপানিতে চাষ হওয়া রুই, কাতল, তেলাপিয়া, সরপুঁটি মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আকারে আধা কেজির চেয়ে বড় বা প্রায় এক কেজি ওজনের রুই-কাতলা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। তেলাপিয়ার কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা।
এক মাসের বেশি সময় ধরে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। মিনিকেটের দাম আগের অবস্থায় আছে। ভালো মানের মিনিকেটের দাম কেজি ৭৪ টাকা।
ভারত থেকে আমদানি শুরু হওয়ার কারণে মোটা ও মাঝারি চালের দাম কিছুটা কমেছে। ৫০ কেজির বস্তায় ১০০ টাকার মতো দাম কমেছে, তাতে কেজিতে ২ টাকার মতো কমছে। কারওয়ান বাজারে বিসমিল্লাহ রাইস ট্রেডার্সের দোকানি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পোলাও চালের বাজারটা একটু বেড়ে গেছে। সব ধরনের পোলাও চালের দাম বেড়েছে। পোলাও চালের ২৫ কেজির বস্তার দাম আগে ২১৫০ টাকা থাকলেও দুই সপ্তাহ ধরে তা ২৪৫০ টাকায় ঠেকেছে।
“অর্থাৎ আগে যে চাল ৮৫ টাকা করে বিক্রি হত, সেটা এখন ৯৮ টাকা। আর যেসব পোলাও চাল ১০১ টাকা দরে ছিল সেগুলো হয়ে গেছে ১১০ টাকা।’