কেশবপুর উপজেলার মেহেরপুর গ্রামে একটি বিশাল বটগাছ চোখ ফেরানো দায়। গাছটির শিকড় থেকে বেরিয়ে এসেছে ‘কুমির’, আর ঝুরি দিয়ে তৈরি হয়েছে হাতি ও ঘোড়ার মতো আকৃতি। প্রকৃতির এ বিস্ময়কর দৃশ্য দেখতে দূর–দূরান্ত থেকে আসেন দর্শনার্থীরা। প্রায় ১০ বিঘা জমিজুড়ে বিস্তৃত এই বটগাছ উপজেলা সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত। ধারণা করা হয়, গ্রামের নাম পীর হজরত মেহের উদ্দীন (রহ.)-এর নামানুসারে।

মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ জানিয়েছেন, বটগাছটি প্রায় ১০ বিঘা জমির ওপর বিস্তৃত। স্থানীয়দের মতে, গাছটির বয়স ৫০০–৭০০ বছর হতে পারে। গাছটির প্রবেশপথে ঝুরি দিয়ে গড়া সুদৃশ্য তোরণ দর্শনার্থীদের চোখে পড়ে। ভেতরে ঢুকলে দেখা যায় ঝুরিগুলো হাতি ও ঘোড়ার মতো আকৃতি নিয়েছে, শিকড়গুলো কুমিরের মতো। স্থানীয়রা শিকড়ের কিছু অংশ রং করে সাজিয়ে রেখেছেন।

এলাকা নিস্তব্ধ ও কোলাহলমুক্ত। বসন্তকালে কামিনী ও বকুল ফুলের গন্ধে চারপাশ ভরে যায়। গাছের ছায়ায় প্রচণ্ড গরমেও শীতল পরিবেশ তৈরি হয়। দর্শনার্থীরা শিকড় ও ঝুরির গঠন দেখে মুগ্ধ হন।

প্রতিবছর পয়লা জ্যৈষ্ঠে এখানে মেলা বসে। দূর–দূরান্ত থেকে লোকজন আসে। বাউল, মারফতি ও মুর্শিদি গানের আসর বসে। বিশেষ করে ২৫ জানুয়ারি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাগরদাঁড়িতে আসা দর্শনার্থীরাও বটগাছ দেখতে ভিড় জমান।

মাদারীপুরের কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হাসানুল সিরাজী বলেন, “শুনতে শুনতে অনেক দিন আগেই এই বটগাছের কথা জানতাম। এখানে এসে দেখলাম, শুনার চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর। আবার পরিবারসহ আসব।”

কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, “কেশবপুর একটি পর্যটনসমৃদ্ধ উপজেলা। এলাকাটি সুন্দর ও মনোরম। পর্যটনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে এবং ধাপে ধাপে কাজ করা হবে।”