খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষার পর মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রতিবেদনে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রতিবেদনটি জেলা সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদের কাছে জমা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ পরীক্ষার ১০টি সূচকের সব কটিতে স্বাভাবিক লেখা রয়েছে। প্রতিবেদনে ধর্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পরীক্ষক দলের নেতৃত্ব দেন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ জয়া চাকমা। তিনি জানান, ‘আমরা প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। কী লেখা আছে, সেটা কর্তৃপক্ষ জানাবেন।’
জেলা সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদ বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত মেলেনি। তবে এটি আদালতের বিষয়, আদালতই সত্য-মিথ্যা যাচাই করবেন। প্রতিবেদনটি পুলিশ সুপার ও তদন্ত কর্মকর্তার কাছেও হস্তান্তর করা হয়েছে।’ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আরেফিন জুয়েলও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে এ প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জুম্ম ছাত্র-জনতার মুখপাত্র কৃপায়ন ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ‘এটি সরকারের পরিকল্পিত মনগড়া প্রতিবেদন। এত দ্রুত ধর্ষণ পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়া নজিরবিহীন। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে এক পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। রাতেই অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন হাসপাতাল ছেড়ে যায় সে। এ ঘটনায় শয়ন শীল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনার প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে খাগড়াছড়ি ও পার্বত্য চট্টগ্রামে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। অবরোধের মধ্যে রোববার গুইমারার রামেসু বাজার এলাকায় সহিংসতায় পরিণত হয় পরিস্থিতি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অবরোধকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন, যাঁরা সবাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। আহত হন সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ অন্তত ২০ জন। এ সময় আগুনে পুড়ে যায় প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর ও অন্তত ৪০টি দোকান।
পূর্বের পোস্ট :