আগামী দুই বছরে দেশের ১০ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষের চক্ষু পরীক্ষা ও ১ লাখ ছানি অপারেশনের যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও অরবিস ইন্টারন্যাশনাল।
বাংলাদেশে প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে গৃহীত ‘কমপ্রিহেনসিভ ক্যাটারাক্ট সার্ভিসেস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি উদ্যোগের আওতায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ ভবন-১-এর মিলনায়তনে এ উদ্যোগের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান।
প্রধান অতিথি মো. সাইদুর রহমান বলেন, দৃষ্টিশক্তি না থাকলে একজন মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। ছানি অপারেশনের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলে মানুষ আবার কর্মক্ষম হয়ে ওঠে, যা জাতীয় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
তিনি আরও বলেন, এ উদ্যোগ সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে জাতীয় অন্ধত্ব প্রতিরোধ কর্মসূচিকে আরও কার্যকর করবে এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ আধুনিক চক্ষু চিকিৎসার সুযোগ পাবে।
বিশেষ অতিথি ক্রিস্টি হুবার্ড বলেন, বাংলাদেশে অন্ধত্বের সবচেয়ে বড় কারণ ছানি, অথচ এটি অত্যন্ত সহজে নিরাময়যোগ্য। অরবিস ইন্টারন্যাশনাল প্রায় চার দশক ধরে ছানি অপারেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষের দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বলেন, পিকেএসএফ সারাদেশে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পিকেএসএফ স্বাস্থ্য ও জীবিকা-সংক্রান্ত ঝুঁকি প্রশমনে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা ও প্রাথমিক চিকিৎসা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে অনেক সময় সরকারি সেবা পৌঁছানো সম্ভব হয় না, সেখানে পিকেএসএফ সহযোগী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এক লাখ ছানি অপারেশনের এই উদ্যোগ দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
কমপ্রিহেনসিভ ক্যাটারাক্ট সার্ভিসেস উদ্যোগের আওতায় পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থার সহায়তায় ৫ হাজার আউটরিচ কর্মসূচির মাধ্যমে ১০ লাখ রোগীর চক্ষু পরীক্ষা করা হবে।
পাশাপাশি অরবিসের সহযোগী ২৫টি চক্ষু হাসপাতালের মাধ্যমে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রাথমিক চক্ষু পরীক্ষা ও রেফারেলের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
দেশের ৫০টি জেলায় সরকার পরিচালিত ২০০টি কমিউনিটি আই সেন্টার এবং অরবিসের সহযোগী চক্ষু হাসপাতাল পরিচালিত ১০০টির বেশি ভিশন সেন্টার রেফারেল ও ফলোআপ পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া, অরবিসের সহযোগী চক্ষু হাসপাতাল ছানিরোগী বাছাই ও তাদের ছানি অপারেশন সম্পাদন করবে।