রংপুরের হারাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে ঢুকে তাদের শারীরিক নির্যাতন করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, ইমতিয়াজ মোটরসাইকেল যোগে বিদ্যালয়ে এসে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একে একে ডেকে বেত নিয়ে মারধর করেন। মারধরের পর অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একজন শিক্ষার্থী আইরিন আক্তারকে দুই দিন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাত ইসলাম বলেন, “শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক থাকলেও কেউ প্রতিবাদ করেননি। মেয়েদেরও মারধর করা হয়েছে। বেত ভেঙে ফেলেছে। আমরা লজ্জিত, অনেকের শরীর লাল হয়ে গেছে।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমতিয়াজ আহম্মদ বলেন, “আমি শুধু শাসন করছি। শিক্ষার্থীদের উন্নতির জন্য কাজ করছি। কিছু শিক্ষার্থী বাদ দিয়ে ৯৫ শতাংশ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি।”

অন্যদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান দাবি করেন, “ঘটনাটি মীমাংসা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিষয়টি মেনে নিয়েছে।”

তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, “এটি শাসন নয়, শিক্ষার্থী নির্যাতন এবং একটি ফৌজদারি অপরাধ। প্রধান শিক্ষকের উচিত ছিল বিষয়টি উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানানো।”

পরশুরাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম জানান, একজন অভিভাবক অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি করেছেন এবং পুলিশ বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

রংপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হাই বলেন, “শিক্ষার্থী নির্যাতন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এখন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবিতে শঙ্কিত।