রাজধানীতে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে অন্তত চার শিক্ষার্থী ভবন থেকে লাফ দিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১০ শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। ভূমিকম্পটিকে তারা মাঝারি মাত্রার বলে উল্লেখ করেছে।
লাফ দিয়ে আহত শিক্ষার্থীরা
হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের চারতলা থেকে লাফ দিয়ে তানজীর হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। একই হলে আরও দুই শিক্ষার্থী ছাদ থেকে লাফিয়ে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের একজন শিক্ষার্থী লাফ দিয়ে আহত হয়েছেন, তাঁর পা ভেঙে গেছে।
এ ছাড়া কবি জসিম উদ্দীন হল, সূর্যসেন হল, ফজলুল হক মুসলিম হল এবং ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ হলেও কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
ভবনের পলেস্তারা খসে পড়া
ভূমিকম্পে ঢাবিতে কয়েকটি হল ভবনের পলেস্তারা খসে পড়েছে। মহসিন হলসহ একাধিক ভবনে এমন ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীদের বিবরণ
মহসিন হলের শিক্ষার্থী হেলাল উদ্দিন ফেসবুকে লিখেছেন, ভূমিকম্প দীর্ঘ হওয়ায় তিনি দিশেহারা হয়ে ছাদে চলে যান। তিনতলা, চারতলা থেকে কয়েকজনকে লাফ দিতে এবং আহত হতে দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন। কয়েকজনকে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী কারীব চৌধুরী ফেসবুকে লেখেন, প্রশাসনের অবহেলায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে থাকে। বড় ধরনের ট্র্যাজেডি না হলে প্রশাসনের টনক নড়ে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ ফেসবুকে জানান, ভূমিকম্পে পাঁচটি হলের ভবনের পলেস্তারা খসে পড়েছে। দুটি হলে দেয়ালের ইট ভেঙে টুকরো পড়েছে। এসব দৃশ্য দেখে আতঙ্কে কয়েকজন শিক্ষার্থী লাফিয়ে বা তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তাঁর তথ্যমতে, আহতের সংখ্যা অন্তত পাঁচজন; কিছু ছাত্রী অজ্ঞানও হয়ে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের বিবৃতি
ফায়ার সার্ভিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভূমিকম্পের সময় খিলগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে একটি ইট পড়ে পাশের দোতলা ভবনের এক ব্যক্তি আহত হন।
বারিধারা এফ ব্লকের একটি বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বারিধারা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ভূমিকম্পের কারণে আগুন লেগেছে কি না, তা নিশ্চিত নয়।
স্বামীবাগে আটতলা একটি ভবন হেলে পড়ার খবরের পর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। কলাবাগানে সাততলা একটি ভবন হেলে পড়ার খবরও যাচাই করতে একটি ইউনিট যায়। পরিদর্শনে দেখা যায়—ভবনগুলো স্বাভাবিক রয়েছে, আতঙ্কে মানুষ অভিযোগ করেছিল।
এ ছাড়া মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় একটি বাসাবাড়িতে আগুন লাগলে গজারিয়া ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট সেখানে যায়।
পূর্বের পোস্ট :