ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঘরবাড়ির দেয়াল ও ছাদের রেলিং ধসে সারাদেশে পাঁচজনের মৃত্যুর এবং দুই শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার সকালের ভূমিকম্পে পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় ৩ জন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক শিশু ও নরসিংদীর পলাশের মালিতা গ্রামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় আহত হয়ে এখন পর্যন্ত ২০৮ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পরিচালক ডা. মঈনুল আহসান বলেন, সব হাসপাতালে জরুরি বার্তা দেওয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব সহায়তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। টেলিফোনে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে—ঢাকাসহ গাজীপুর, নরসিংদী ও আশপাশের জেলাগুলোর বিভিন্ন হাসপাতালে আহত রোগীর চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভূমিকম্পে ৩ জন মারা গেছেন। নিহতদের একজন প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম। আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ১০ জন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ১৮ জন আহত রোগী ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরও রোগী আসতে পারে।
গাজীপুরের তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সবচেয়ে বেশি রোগী চাপ সামলাচ্ছে। হাসপাতালটিতে এ পর্যন্ত ৭২ জন আহত অবস্থায় এসেছেন—এর মধ্যে ৪৯ জন ভর্তি, ২৩ জন প্রাথমিক চিকিৎসা পেয়েছেন।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫৩ জন। ৬ জনকে রেফার্ড করা হয়েছে এবং ১৫ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
নরসিংদী জেলা হাসপাতালে আহত অবস্থায় ৪৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর, তাঁদের ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়েছে।
১০০ শয্যার হাসপাতাল এখানে ১০ জন আহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন।
বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে ভবন থেকে লাফ দেওয়া, সিঁড়ি দিয়ে দৌড়াদৌড়ি কিংবা ভিড়ের কারণে অনেকেই আঘাত পেয়েছেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকায় ভূমিকম্পে ভবনের দেয়াল ধসে ১০ মাস বয়সী এক শিশু মারা গেছে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকায় ভূমিকম্পের ঘটনায় শিশুটির মাসহ আরও দুজন আহত হয়েছেন।
ভূমিকম্পে নরসিংদীর পলাশে মালিতা গ্রামে কাজম আলী নামে এক বৃদ্ধ মাটির ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছে। পলাশ থানার ওসি মনির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সময় গড়ালে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করছেন অনেকে।
পূর্বের পোস্ট :