লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কয়েকজন কাউন্সিলর বাংলাদেশে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে প্রচার চালাচ্ছেন—এ খবর জেনে ‘হতভম্ব’ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী স্টিভ রিড।
আবাসন, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী স্টিভ রিড এ বিষয়ে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলকে এক চিঠিতে লিখেছেন, স্থানীয় সরকারের অংশ হয়ে অন্য দেশের নির্বাচনে লড়ার প্রচারণা চালানো ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’।
তিনি বলেন, গত বছর দলগুলোর নেতৃত্ব, সুশাসন ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগের কারণে টাওয়ার হ্যামলেটসে সরকারি প্রতিনিধিদের পাঠানো হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের স্থানীয় জনগণের স্বার্থ বাদ দিয়ে অন্য দেশের রাজনীতিতে জড়ানো ‘হতবাক করার মতো’।
রিড ওই কাউন্সিলরদের বাংলাদেশে নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের মনোযোগ থাকা উচিত টাওয়ার হ্যামলেটসের জনগণের সেবায়, যেখানে কার্যকর পরিবর্তনের জন্য নিবেদিত নেতৃত্ব প্রয়োজন।
ব্রিটিশ দৈনিক স্ট্যান্ডার্ড এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টাওয়ার হ্যামলেটসের কয়েকজন কাউন্সিলর নিশ্চিত করেছেন তারা আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। তাদের মধ্যে অন্তত দুজন বিএনপির প্রার্থী হিসেবে লড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তাদের একজন সাবিনা খান, যিনি ২০২২ সালে লেবার দলের হয়ে মাইল এন্ড ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিলেন, পরে অ্যাস্পায়ার পার্টিতে যোগ দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশে প্রচারণার নানা ছবি ও বার্তা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও তাকে কাউন্সিলর পদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরেকজন হলেন ল্যান্সবেরি ওয়ার্ডের স্বতন্ত্র কাউন্সিলর ওহিদ আহমেদ। তিনিও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় রয়েছেন।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের এক মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাজ্যের আইনে অন্য দেশে প্রার্থী হওয়া কাউন্সিলরের পদে অযোগ্যতা তৈরি করে না, তবে অন্য দেশের আইনে তা সীমিত হতে পারে।
ব্রিটিশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, বিদেশি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রচার ‘গ্রহণযোগ্য নয়’। তিনি বলেন, কাউন্সিলরদের অবশ্যই তাদের নির্বাচকদের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে এবং সততা, জবাবদিহিতা ও নৈতিকতার ‘নোলান মূলনীতি’ মেনে চলতে হবে।
অ্যাস্পায়ার পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে এমপি নির্বাচিত হলে সাবিনা খান কাউন্সিলর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। লন্ডনে আগামী মে মাসে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রিটিশ সরকার চলতি বছরের শুরুতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্বচ্ছতার ঘাটতি ও ‘বিষাক্ত সংস্কৃতি’র কারণে সেখানে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি নিয়োগ করেছিল।
পূর্বের পোস্ট :