গত বছর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত, পলাতক অবস্থায় পাবেন না আপিলের কোনো সুযোগ।
সোমবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের সাজা হলে তারা আপিল করতে পারবেন না, কারণ তারা পলাতক।
"ট্রাইব্যুনাল আইনে পরিষ্কার বলা আছে, রায় দেয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে। তবে আপিলের সুযোগ নিতে হলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আত্মসমর্পণ করতে হয়। অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি গ্রেফতার করতে পারে, তাহলেও আপিলের সুযোগ পান আসামিরা," বলেন মোনাওয়ার।
হাসিনার সাজার পাশাপাশি আরেক আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। আর রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রায়ে শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান কামালের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে জুলাই শহীদদের দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রায়ে বলা হয়-শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।
গত ১ জুন শেখ হাসিনাসহ এই তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে এই তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগগুলো হলো— গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ প্রদান; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর অভিযোগ।
এই পাঁচ অভিযোগে তিন আসামির বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলার একমাত্র গ্রেফতারকৃত আসামি।
পূর্বের পোস্ট :