২০২৫ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন হাঙ্গেরিয়ান লেখক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। নোবেল কমিটি জানিয়েছেন, তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ‘তাঁর সুনিশ্চিত ও দিব্যদৃষ্টিপূর্ণ সাহিত্য সম্ভারের জন্য, যা মহাবিপর্যয়ময় আতঙ্কের কালে শিল্পের শক্তির কথা শোনায়’।

লাসলো ক্রাসনাহোরকাই ১৯৫৪ সালে রোমানিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলাতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘সাতানটাঙ্গো’ (১৯৮৫) হাঙ্গেরির একটি গ্রামীণ পরিত্যক্ত সমবায় খামারে বাস করা দরিদ্র মানুষের জীবনকে তুলে ধরে। সমাজতন্ত্রের পতনের ঠিক আগমুহূর্তে অনিশ্চয়তা ও নিরাশার মধ্যে দিন কাটানো মানুষদের জীবনবৃত্তান্ত এতে প্রতিফলিত হয়েছে।

লেখকের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিসট্যান্স’ (১৯৮৯) ভয়াবহ এক দুঃস্বপ্নের চিত্র অঙ্কিত করে। পাহাড়ে অবস্থিত একটি ছোট শহরে প্রবেশ করে প্রেতাত্মাসদৃশ সার্কাসদল, যার মূল আকর্ষণ একটি বিশাল তিমির মৃতদেহ। এই ঘটনার মাধ্যমে শহরের ভিতরে সহিংসতা, অরাজকতা ও সেনাবাহিনীর ব্যর্থতা উঠে আসে।

উপরন্তু, ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ (১৯৯৯) ও ‘ব্যারন ভেঙ্কহেইম’স হোমকামিং’ (২০১৬) উপন্যাসগুলোতে তিনি হাঙ্গেরির সীমানার বাইরের প্রেক্ষাপট ও ব্যক্তিগত যাত্রার গল্প বর্ণনা করেছেন। সাম্প্রতিকতম ‘হেরস্ট ০৭৭৬৯’ (২০২১) পূর্ব জার্মানির একটি ছোট শহরের সামাজিক অস্থিরতা এবং সঙ্গীতজ্ঞ বাখের সঙ্গীত ও ঐতিহ্যের ছায়া নিয়ে আবর্তিত হয়েছে।

ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাফকা ও টমাস বার্নহার্ডের প্রভাব দেখা যায়। নোবেল কমিটি তাকে ‘চিন্তাশীল, সূক্ষ্মভাবে পরিমিত স্বর গ্রহণকারী’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। মধ্য ইউরোপীয় ঐতিহ্যের একজন মহাকাব্যিক লেখক হিসেবে তিনি সাহিত্যে এক অনন্য অবস্থান তৈরি করেছেন।

সূত্র: নোবেল কমিটির ওয়েবসাইট