জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের গুরুত্বপূর্ণ পদটি দীর্ঘ তিন সপ্তাহ শূন্য থাকার পর অবশেষে সেই দায়িত্ব পেলেন মো. এহছানুল হক। রোববার (১২ অক্টোবর) এক প্রজ্ঞাপনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, “জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।”

জ্যেষ্ঠ সচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তা এত দিন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন। অন্তর্বর্তী সরকার তাকে এবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নিয়ে এ পদে নিয়োগ দিল।

এর আগে ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার স্থলাভিষিক্ত হন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান, যাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিতে আনা হলেও মাত্র এক বছর পর ২০২৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তাকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে বদলি করা হয়।

দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মোখলেসুর রহমান ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) গণহারে বদলি এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘আর্থিক লেনদেনের’ অভিযোগকে কেন্দ্র করে। যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “এসবের বিন্দু বিসর্গও সত্য নয়।”

তাকে সরিয়ে দেওয়ার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পদটি খালি থাকায় মাঠ প্রশাসনে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির অনেক কাজই থমকে যায়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক বিষয়ও আটকে পড়ে। এই পদে নতুন কাউকে আনতে সময় নিচ্ছিল অন্তর্বর্তী সরকার। একাধিক কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে রাজনৈতিক তদবির এবং পরামর্শের চাপ ছিল প্রশাসনের ওপর।

অবশেষে ১৯৮২ সালের বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা মো. এহছানুল হককে এই পদে আনা হল। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অবসরে গেলেও, ২০২৪ সালের অগাস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে তাকে চুক্তিতে পুনর্বহাল করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নতুন দায়িত্বে যোগ দিয়ে তিনি এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্ব দেবেন, যা মাঠ প্রশাসন, পদোন্নতি, বদলি ও নীতিনির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক পদ।

এই নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম আবার স্বাভাবিক ধারায় ফিরবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।