দেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে মোবাইল ফোন নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা কার্যকর হতে যাচ্ছে। এতে গ্রাহক ভোগান্তি ও নানা জটিলতা তৈরির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষ করে পুরনো হ্যান্ডসেট ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ ছাড়া একজনের নামে নিবন্ধিত হ্যান্ডসেটে অন্য কারও সিম ব্যবহার করা যাবে না।
তাছাড়া ‘ক্লোন’ হ্যান্ডসেটগুলো এই প্রক্রিয়ায় আরও জটিলতা বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস থেকে চালু হচ্ছে ‘ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার’ (এনইআইআর), যার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি মোবাইল ফোনকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে।
বুধবার বিটিআরসিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। এসময় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী ও মহাপরিচালক আমিনুল হকও উপস্থিত ছিলেন।
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর কার্যকরের আগ পর্যন্ত দেশের নেটওয়ার্কে থাকা সব ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধনের আওতায় আসবে। এমনকি অবৈধ বা ক্লোন ফোনও বন্ধ হবে না, বরং সার্ভারের গ্রে লিস্ট ক্যাটেগরিতে থাকবে।’
তিনি আরও জানান, এনইআইআর চালু হলে সিমকার্ডের মতো প্রতিটি হ্যান্ডসেটও নিবন্ধিত হবে। ফলে ইচ্ছেমতো যেকোনো সিম একটি হ্যান্ডসেটে ব্যবহার করা যাবে না।
১৬ ডিসেম্বরের পর নতুন ফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হলে সেটির নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হবে। বৈধ ফোনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে, গ্রাহকদের আলাদা করে ঝামেলায় পড়তে হবে না। তবে অন্য ফোন ৩০ দিন নিবন্ধন ছাড়া চালানো যাবে, এর পর নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
একইসঙ্গে কোনো ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত ফোনে শুধু তারই নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করা যাবে। পুরনো হ্যান্ডসেট বিক্রি বা অন্যকে দেওয়ার আগে সেটি ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ করতে হবে।
গ্রাহকের সম্ভাব্য দুর্ভোগের বিষয়ে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, ‘মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এনইআইআর চালুর পর মানুষের দুর্ভোগ কমানো। কোটি মানুষের কাছে থাকা হ্যান্ডসেটের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।’
এনইআইআরের অধীনে ফোনের মালিক মারা গেলে বা বিদেশে গেলে ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ প্রক্রিয়া কেমন হবে জানতে চাইলে বিটিআরসির মহাপরিচালক আমিনুল হক বলেন, ‘ডিরেজিস্ট্রেশন নথি যাচাই করে হয়। মালিকের এনআইডি বা পাসপোর্টের শেষ চার ডিজিট জানা থাকলে আত্মীয়দের কেউ সেটি করতে পারবেন। ক্লোন ফোনের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা হবে, তখন টার্গেট সিম নির্ধারণ করে দিতে হবে।’
বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী বলেন, ‘একই আইএমইআই নম্বরে এক লাখ হ্যান্ডসেট পর্যন্ত এসেছে—এটা বড় সমস্যা। সাইবার নিরাপত্তা দিতে গেলে মানুষের জীবনে কিছুটা দুর্ভোগ আসবেই। তাই আমরা ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করব খুবই মৃদুভাবে, ধীরে ধীরে কঠোর হব।’
পূর্বের পোস্ট :