দীর্ঘ এক বছরের আলোচনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কারে গৃহীত উদ্যোগগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নির্ধারণে সোমবার সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

কমিশনের এক সদস্য জানিয়েছেন, সোমবার বিকেলে সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে কমিশন সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কিত সুপারিশ জমা দেবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কিত সুপারিশ আমরা চূড়ান্ত করেছি। দু-একদিনের মধ্যে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে তা জমা দেব।’

রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ ও অঙ্গীকারনামা সম্বলিত জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর হয় ১৭ অক্টোবর। ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশ নেওয়া ২৪টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং কমিশনের সদস্যরাও এই দলিলে স্বাক্ষর করেন।

সনদে সই করার পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশন ‘অসম্ভবকে সম্ভব’ করেছে। তাঁর মতে, এটি সারা বিশ্বের কাছে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

দুই দিন পর সনদে স্বাক্ষর করে গণফোরাম। তবে জুলাই অভ্যুত্থানের সামনের সারির ছাত্রনেতাদের নিয়ে গড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বাম ধারার চার দল—বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ও বাসদ (মার্কসবাদী)—সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি এবং এতে স্বাক্ষরও করেনি।

ঐতিহাসিক এই দলিলে স্বাক্ষর হলেও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও গণভোট নিয়ে দলগুলোর মধ্যে এখনও মতভিন্নতা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নির্ধারণে সরকারের কাছে সুপারিশ দেওয়ার দায়িত্ব নেয় ঐকমত্য কমিশন।

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত এই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে ঘটবে বলে তিনি আশা করেন।