আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তার আইনজীবী হিসেবে আর না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ ঘোষণা দেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টিএফআই সেল ও জেআইসি সেলে গুম ও খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলায় এই ১৫ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

গত ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১–এ ওই ১৫ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে শুনানি করেছিলেন সরোয়ার হোসেন।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, গুমের একটি অভিযোগ তিনি এরইমধ্যে ট্রাইব্যুনালে দায়ের করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার একজন আসামি আছেন এই ১৫ কর্মকর্তার মধ্যেই। তাই ‘নৈতিক কারণে’ তাঁদের পক্ষে তিনি আর থাকতে পারছেন না। তাছাড়া বার কাউন্সিল আইনও এটি সমর্থন করে না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সরোয়ার হোসেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও গুম কমিশনে সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদসহ তিনজন সাবেক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘প্রফেশনাল নৈতিক অবস্থান থেকে আমি তাঁদের পক্ষে মামলা চালাতে পারি না।’

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই তিন মামলায় ২৮ আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

তাঁদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ছাড়া বাকিরা সবাই সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকীও আছেন তাঁদের মধ্যে।

গত ১১ অক্টোবর সেনা সদরের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিন মামলার ২৮ আসামির মধ্যে চাকরিতে থাকা এবং এলপিআরে যাওয়া ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

পরে তাঁদের রাখার জন্য ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে অস্থায়ী ‘কারাগার’ ঘোষণা করে সরকার।

গত বুধবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ওই ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে প্রিজনভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ।