জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) নিয়ে ‘সম্মানহানিকর’, ‘কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা’ মন্তব্যের অভিযোগে বিতর্কিত ধর্মীয় বক্তা মুফতি আমির হামজাকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, সিনেট সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান মঙ্গলবার তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দিয়েছেন।

নোটিসটি ডাকযোগে আমির হামজার কুষ্টিয়ার গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে বলে শিহাব উদ্দিন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর কুষ্টিয়া শাখার নেতা মুফতি আমির হামজাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।”

আমির হামজা দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচিত। ২০২১ সালের মে মাসে তরুণদের উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগে ঢাকা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, আমির হামজা নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের ‘মদ’ খাইয়ে কুলি করার এবং শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের লাঠি মারার অভিযোগ করেছেন। এসব বক্তব্যকে নোটিসে ‘মিথ্যা, অবমাননাকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

নোটিসে বলা হয়, তার এসব মন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে এবং সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খানের অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে এসব দাবি নাকচ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও আমির হামজা কোনো প্রতিবাদ জানাননি, যা তার বক্তব্যের অসত্যতা প্রমাণ করে।

আইনি নোটিসে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়, বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে মিথ্যা বক্তব্যযুক্ত ভিডিও দ্রুত ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে।

দাবি পূরণ না হলে ফৌজদারি মামলা ও দেওয়ানি মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় রোববার একটি বিবৃতিতে আমির হামজার দাবিকে অসত্য আখ্যায়িত করে জানিয়েছে, ২০১১ সালে চালু হওয়া জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। তাই আমির হামজার নিজের ওই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী হওয়ার দাবি ভিত্তিহীন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে তার দেওয়া বক্তব্য সম্পূর্ণ মনগড়া ও সত্যের অপলাপ মাত্র।