রাঙামাটির বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের বরুণাছড়ি এলাকায় গত মঙ্গলবার সকালে কাপ্তাই হ্রদের ধারে এক বিরল গোলাপি হাতিশাবকের মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, মৃতদেহটি মা হাতিসহ একদল বুনো হাতি ঘিরে রেখেছিল। খবর পেয়ে প্রাণিসম্পদ ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

কিন্তু যখনই বন বিভাগের কর্মীরা শাবকটির মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করেন, তখনই মা হাতিসহ হাতির পালটিতে তাড়া পেয়ে তারা বাধা দেন। হাতির এই পাহারার কারণে শাবকটির মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সুবলং রেঞ্জের কর্মকর্তা মতিউর রহমান জানান, ‘গতকাল থেকে আমরা মৃত শাবকটি উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। কিন্তু এখনো সফল হইনি। যদি হাতির দলকে জোর করে সরানো হয়, তবে তারা এলাকার মানুষের ক্ষতি করতে পারে। তাই মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আমরা অপেক্ষা করছি।’

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৃত হস্তিশাবকটি এশিয়ান প্রজাতির এবং এর বয়স প্রায় ৯ মাস। মৃত হাতিটির ময়নাতদন্ত করা হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

এর আগে, গত ১৩ জুন রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় একদল হাতিকে পানিতে সাঁতরাতে দেখা যায়। সেই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোড়ন তোলে। ছবিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে একটি হালকা গোলাপি রঙের হস্তিশাবক দেখা যায়, যা আগে কেউ দেখেনি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ আজিজ জানান, ‘দেহের এই রঙ দেখে অনেকের কাছে এটি ভিন্ন প্রজাতি মনে হতে পারে। তবে এটি এশিয়ান হাতির মধ্যে রঙজনিত ভিন্নতা মাত্র। প্রায় ১০ হাজার শাবকের মধ্যে একটি এমন রঙের জন্ম হতে পারে।’

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, প্রাণীর দেহের রঙ মেলানিন নামের রঞ্জকের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। পিতা-মাতা উভয় থেকে বাচ্চার দেহে মেলানিন তৈরির জিনগত ফ্যাক্টর স্থানান্তরিত না হলে বা জিনে মিউটেশন ঘটলে বাচ্চার ত্বক, লোম ও চোখের রঙ সাদা, গোলাপি বা বাদামি হতে পারে। এমন প্রাণীকে বিজ্ঞানীরা অ্যালবিনো হিসেবে অভিহিত করেন।