বগুড়া: বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পরিষদের সামনে গত জুনে এক দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ী বিলু চৌধুরী নিহত হয়েছেন। তিনি রাস্তা পারাপারকালে একটি তিন চাকার যান ধাক্কা দিয়ে আহত করেন। রাজধানীর হাসপাতালে ১৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মারা যান।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই এলাকা নিয়মিত দুর্ঘটনাপ্রবণ। শেরপুর থেকে দক্ষিণ সীমাবাড়ি পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার মহাসড়ক দুর্ঘটনার ‘হটস্পট’। দ্রুতগতিতে চলাচলকারী যানবাহন, রাস্তা পারাপারের নিরাপত্তাহীনতা ও অস্বাস্থ্যকর যানবাহন–সবই দুর্ঘটনার কারণ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০–২০২৪ সালের মধ্যে দেশে মোট ৩৭ হাজার দুর্ঘটনার মধ্যে ২১টি এলাকা ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই ২১ স্থানে মোট দুর্ঘটনার ১৪ শতাংশ ঘটেছে। শেরপুরের শেরপুর ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই এই তালিকায় রয়েছে।

মিরসরাইয়ে গত এক বছরে ৮২ দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার মূল কারণ: চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানো, অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের চলাচল, দ্রুতগতি ও বর্ষায় সড়কের খানাখন্দ।

দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৬.৫ মিলিয়ন হলেও প্রায় ৭ মিলিয়ন অবৈধ বা ছোট যানবাহন চলাচল করে। এদের মধ্যে নছিমন, ভটভটি, ইজিবাইক, করিমন, পাখি এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা রয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ৪৪৬টি দুর্ঘটনায় ৪১৭ জন নিহত ও ৬৮২ জন আহত হয়েছেন। মোট দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেলচালক ও আরোহীর সংখ্যা ৩৪ শতাংশ, তিন চাকার যানবাহনের ২৩ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উন্নত সড়ক থাকলেও অনুন্নত যান ও পরিকল্পনার অভাবে দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। বুয়েটের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘উন্নত সড়কে চলছে নিবন্ধনহীন ও অনুন্নত যান; এটি এক চরম দ্বান্দ্বিক অবস্থা।’

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন দুর্ঘটনা কমাতে স্থানভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে। তবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।